খেলাধুলার মাধ্যমে যোগ্য নাগরিক গড়ে তুলতে চাই: প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিনের হাতে শিরোপা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিনের হাতে শিরোপা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার সব সময় খেলাধুলাকে গুরুত্ব দেয়, কারণ এর মাধ্যমে আগামীর নাগরিকেরা যেন যোগ্য হয়ে গড়ে উঠতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন বলেই আজকে স্বাধীন দেশে আমরা এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পেরেছি। খেলাধুলার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ আরও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক, সেটাই আমরা চাই।’

শেখ হাসিনা আজ শনিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২০–এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।

খেলাধুলার মধ্য দিয়েই ছেলেমেয়েরা এগিয়ে যাক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা প্রাথমিক স্কুল পর্যায় থেকেই মেয়েদের জন্য বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং ছেলেদের জন্য বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করেছি।’ তিনি বলেন, ‘ফুটবল বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা এবং দেশের মানুষের কাছেও এটি সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।’

জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী এবং মুজিব বর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের এই ষষ্ঠ আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে ফিলিস্তিন জাতীয় ফুটবল দল। ফাইনালে বুরুন্ডিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিন এবারও শিরোপা জয় করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিআইপি গ্যালারিতে বসে খেলা উপভোগ করেন। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিআইপি গ্যালারিতে বসে খেলা উপভোগ করেন। ছবি: ফোকাস বাংলা

অনেক জল্পনাকল্পনার পর ফুটবলের অনুপম প্রদর্শনীতে আফ্রো-এশিয়ার এই ফাইনালে শেষ হাসি হেসেছে এশিয়ার প্রতিনিধি এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিন। অবশ্য মাত্র ৪৮ লাখ ১৭ হাজার জনসংখ্যার দেশ হলেও এশিয়ার প্রতিনিধি ফিলিস্তিন (ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১০৬) প্রতিপক্ষ বুরুন্ডি (১৫১) থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিল।

১৫ জানুয়ারি শুরু হওয়া এবারের ৬ জাতির টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে বুরুন্ডির কাছেই ৩-০ গোলে পরাজিত হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। অন্যদিকে, সেশেলসকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে ফিলিস্তিন।

এর আগে মালয়েশিয়া লাল দল, জাপানের একটি ক্লাব একাদশ, মালয়েশিয়া অনূর্ধ্ব–২২ দল, নেপাল এবং গতবার ফিলিস্তিন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের শিরোপা জয় করে।

প্রধানমন্ত্রী চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিন দলের ক্যাপ্টেন ও কর্মকর্তাদের হাতে শিরোপার ট্রফি এবং ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের প্রাইজমানির চেক তুলে দেন। রানার্সআপ আপ দল বুরুন্ডি পায় ২০ হাজার মার্কিন ডলার অর্থের চেক।

প্রধানমন্ত্রী উভয় দলের খেলোয়াড়, কর্মকর্তা ও ম্যাচ অফিশিয়ালদের হাতে ব্যক্তিগত পুরস্কারও তুলে দেন।

বুরুন্ডির আক্রমণভাগের খেলোয়াড় জসপিন সিমিরিমানা ৭ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে ‘গোল্ডেন বুট’ এবং একসঙ্গে সেরা খেলোয়াড় হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ‘গোল্ডেন বল’ পুরস্কার গ্রহণ করেন। এ ছাড়া টুর্নামেন্টের ‘ফেয়ার প্লে’ ট্রফিও জয় করে চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিন।

প্রধানমন্ত্রী খেলার প্রথমার্ধের শেষ দিকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আসেন। এরপর ভিআইপি গ্যালারিতে বসে খেলা উপভোগ করেন। এ সময় বাংলাদেশ সফররত ব্রাজিল বিশ্বকাপ দলের গোলরক্ষক জুলিও সিজার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী, ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান, বাফুফের কর্মকর্তা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এই আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করায় শেখ হাসিনা সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী অংশগ্রহণকারী দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, ‘আমি আশা করি, আপনারা বাংলাদেশকে পছন্দ করেছেন। বাংলাদেশ একটি সুন্দর দেশ। আমরা আশা করি, আপনারা ভবিষ্যতেও আসবেন এবং আমাদের প্রতিযোগিতাগুলোয় অংশ গ্রহণ করবেন।’ ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও অনেক টুর্নামেন্ট আয়োজন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।