যেখানে আগের রাতে ভোট হয়, সেখানে তালিকায় কী লাভ

জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি
জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি

মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই শেষে ডেটাবেইসে অন্তর্ভুক্তির জন্য সময় বাড়াতে ‘ভোটার তালিকা (সংশোধন) বিল, ২০২০’ পাস হয়েছে। তবে এ বিলের জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারাহানা বলেন, যে দেশে আগের রাতে ভোট হয়, সে দেশে ভোটার তালিকা করে কী লাভ?

আজ রোববার সংসদের বৈঠকে বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এর আগে বিকেল সাড়ে চারটায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, ভোটার দিবসের সঙ্গে মিল রেখে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় ‘২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চ’ করা হয়েছে। এতে হালনাগাদের সময় ৩০ দিন থেকে বেড়ে ৬০ দিন করা হয়েছে।

বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই–বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তি করা হয়। জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি–দলীয় সাংসদ হারুনুর রশীদ ও রুমিন ফারাহানা চলমান নির্বাচনপ্রক্রিয়ার কঠোর সমালোচনা করেন। রুমিন বলেন, যে দেশে আগের রাতে ভোট হয়, প্রশাসন ও দলীয় ক্যাডাররা ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরে রাখে, ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা যান না, সেই দেশে ভোটার তালিকা করে কী লাভ?

হারুনুর রশীদ বলেন, দেশের নির্বাচনপ্রক্রিয়া কি এভাবেই চলতে থাকবে? সংসদে আসার আগেই ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই পক্ষের সংঘর্ষের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, রীতিমতো যুদ্ধ দেখে এসেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নীরব, প্রশাসন নীরব। এভাবে চলতে থাকলে আইন প্রণয়ন করে কী হবে? এসব বাদ দিয়ে যেভাবে ফ্রি স্টাইলে দেশ চলছে, সেভাবেই চলতে থাকুক। নির্বাচনী প্রচারে এই সংসদের মন্ত্রী–এমপিরাই আইন মানছেন না। আইন প্রণয়ন বাদ দিয়ে একদলীয়ভাবে দেশ চলতে থাকুক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

বিএনপির সাংসদদের এসব বক্তব্যের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিএনপির মুখেই এসব কথা মানায়। কারণ, তাদের ভোট করার অভ্যাস নেই। তারা ক্ষমতা দখল করে হ্যাঁ–না ভোট করেছিলেন। তাতেও সন্তুষ্ট হতে না পেরে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার বানিয়ে নির্বাচনে জয়লাভের চেষ্টা করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের আয়োজন করেছিলেন। এখন বিএনপির দলীয় সাংসদেরা আইনের দীক্ষা দিচ্ছেন!

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণসংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান আইনে প্রতিবছর ২ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে হালনাগাদ করার বিধান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করে ডেটাবেইসে অন্তর্ভুক্ত করে সারা দেশে সিডি আকারে প্রস্তুত করা অনেক কষ্টসাধ্য। এ জন্য সময় বাড়াতে বিলটি আনা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২ মার্চ ‘জাতীয় ভোটার দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে।

এর আগে ২০ জানুয়ারি বিলটি সংসদে তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে সেটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।