কূটনীতিকদের কাছে অভিযোগ ও আশঙ্কার কথা জানাল বিএনপি

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ও নিজেদের প্রার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে কূটনীতিকদের অবহিত করেছে বিএনপি। এ ছাড়া ইভিএমের ভোট কারচুপির আশঙ্কাও কূটনীতিকদের জানানো হয়।

আজ রোববার রোববার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকায় নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি।

বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি–দলীয় প্রার্থীদের ওপর সরকারি দলের হামলা, হয়রানি, মামলা, গ্রেপ্তারসহ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের নানান ঘটনা কূটনীতিকদের জানানো হয়। বৈঠকের পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক প্রেক্ষাপট, সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মানুষ অধিকারহীন অবস্থায় আছে। ভোটের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু হবে কি না, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

আমীর খসরু আরও বলেন, ‘সরকারি দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ফুটপাতেও নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন, বড় বড় পোস্টার ছাপানো, মাইক ব্যবহার সময়-অসময়ে ইত্যাদি কাজ করে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিগোচরও হচ্ছে না। ২৮ জানুয়ারি যে বৈঠক ডাকা হয়েছে, তার আলোচ্যসূচিতেও নেই। এ রকম অবস্থায় নির্বাচনে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। যেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না, সেখানে নির্বাচনের ওপর মানুষের ভরসা কোত্থেকে আসবে?’

এক পক্ষকে আটকিয়ে আরেক পক্ষ সব আইন ভঙ্গ করে নির্বাচনী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি এই নেতা বলেন, ঢাকার উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণের প্রার্থী ইশরাক হোসেনের ওপর হামলার ঘটনা এবং তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দেওয়ার বিষয়টিও কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়েছে।

ইভিএমের ভোট গ্রহণের বিষয়টিও কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘কুটনীতিকেরা প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশের। তারা কেউ কিন্তু ইভিএম ব্যবহার করছে না। কারণ, ইভিএম ব্যবহার করার অর্থ হচ্ছে, প্রোগ্রামিংটা যারা করবে, তাদের পক্ষে যাবে। প্রোগ্রামে যা থাকবে, তা–ই রেজাল্ট হবে—এটা পরিষ্কার।’ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সারা জীবন ব্যালট পেপারে ভোট দিয়ে আসছেন। ইভিএম এনে ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার যে প্রক্রিয়া, তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা, ভারত, ফ্রান্স, তুরস্ক, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ২০ দেশের কুটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ প্রমুখ।