পাত্রখোলা লেক : পরিযায়ী পাখিদের জলকেলি

লেকে উড়ে বেড়াচ্ছে পরিযায়ী পাখি। সম্প্রতি কমলগঞ্জের পাত্রখোলা চা-বাগানে।  প্রথম আলো
লেকে উড়ে বেড়াচ্ছে পরিযায়ী পাখি। সম্প্রতি কমলগঞ্জের পাত্রখোলা চা-বাগানে। প্রথম আলো

সুনসান চা–বাগানের ভেতরে সবুজে ঘেরা পাত্রখোলা চা–বাগান লেক। লেকের জলে ফুটে আছে পদ্ম। আর ওপরে ওড়াউড়ি করছে নানা প্রজাতির পাখি। পরিযায়ী এসব পাখির জলকেলি-খুনসুটিতে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পাত্রখোলা চা-বাগানের ১৮ নম্বর সেকশনে অবস্থান এই লেকের। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গেই পরিযায়ী পাখিরা দলে দলে এখানে আসতে শুরু করে। লেকটি এখন পরিযায়ী পাখির অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। লোকচক্ষুর অন্তরালে হলেও প্রতিদিন এখানে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ। লেকের সৌন্দর্য রক্ষায় বাগান কর্তৃপক্ষ নিয়েছে আলাদা পাহারার ব্যবস্থা।

গত শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, লেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ছে নানা বর্ণের ছোট-বড় পরিযায়ী পাখি। দূর থেকেই ভেসে আসছে তাদের ডানা ঝাপটানোর শব্দ। সব মিলিয়ে লেকটিতে অন্য রকম এক আবহ তৈরি হয়েছে। পাখিদের মধ্যে রয়েছে পানকৌড়ি, ধনেশ পাখি, সাপ পাখি, সাদা বক, লালচে বক, কালো লেজ জৌরালীসহ নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি।

স্থানীয় লোকজন জানান, শীতের মৌসুমে অন্য দেশের পাখিরা এখানে আসে বলে ‘অতিথি পাখি’ নামেই এরা পরিচিত। পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ানো ও পানিতে ঝাঁপাঝাঁপিতে যেন অন্য রকম সৌন্দর্যে সাজে পাত্রখোলা চা–বাগান লেকটি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য মনোমুগ্ধকর। হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আসা পরিযায়ী পাখিদের বিরক্ত না করতে দর্শনার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।

পাখি দেখতে আসা সালাহউদ্দীন, হৃদয় ইসলামসহ কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, ‘এমন কাছ থেকে দেশের আর কোথাও অতিথি পাখি দেখা যায় না। অতিথি পাখিদের অবাধ বিচরণের ব্যবস্থা করা হলে দিন দিন আমাদের দেশে পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। অতিথি পাখি যাতে অবাধে বিচরণ করতে পারে, সেদিকে বন বিভাগের নজর রাখা উচিত।’

পাত্রখোলা চা–বাগানের ব্যবস্থাপক শফিকুর ইসলাম বলেন, একটু শান্ত নিবিড় স্থানে জলাশয়ে অবস্থান করতেই হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে পরিযায়ী পাখিরা এখানে আসে। এ লেকে পরিযায়ী পাখিদের অহেতুক কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে বাড়তি নজরদারি রয়েছে। লেকে এ সময়ে পর্যটকদের বা দর্শনার্থীদের আগমন বেড়ে গেলেই পাখিরা স্থান ত্যাগ করে। গত কয়েক দিনে এ লেকে পাখির সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। মানুষজন যাতে লেকে কম আসেন, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছেন।