চবিতে এবার ছাত্রলীগের আরেক পক্ষের অবরোধের ডাক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) একের পর এক অবরোধ ডেকেই চলেছে ছাত্রলীগের উপপক্ষগুলো। নিজেদের এক কর্মীকে মারধরের প্রতিবাদে গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধের ডাক দিয়েছিল ছাত্রলীগের উপপক্ষ ‘বিজয়’। একই দাবিতে এবার অবরোধের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগের আরেকটি উপপক্ষ ‘রেড সিগন্যাল’ (আরএস)। আজ সোমবার বিকেল সাড়ে চারটায় অবরোধের ডাক দেয় আরএসের নেতা-কর্মীরা।

অবরোধের ডাক দেওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন আরএসের নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপবিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল হাসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা দুইটার দিকে মোহাম্মদ এমরান আশিক নামে তাঁদের এক কর্মীকে মারধর করেন ‘সিক্সটি নাইনের’ নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ক্যাম্পাসের এক নম্বর গেট এলাকায় গিয়ে এলাকাবাসীর ওপরও হামলা করা হয়। এ দুই ঘটনার দায় সিক্সটি নাইনের নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনকে নিতে হবে। তাঁর পদত্যাগ ও মারধরকারীদের আটক না করা পর্যন্ত অবরোধ চলবে।

মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন আগে রেগ সিগন্যাল সিক্সটি নাইনের ওপর হামলা চালায়। এ কারণে সিক্সটি নাইনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে আরএসের কর্মীকে মারধরের পর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরগামী শাটল ট্রেন আটকে দেওয়া হয়। এরপর থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এস এম মনিরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, নিরাপত্তার কারণে ট্রেন চলাচল আপাতত বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি মূলত দুটি পক্ষে বিভক্ত। এর মধ্যে একটি পক্ষের নেতা-কর্মীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অন্য ধারাটি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ দুটি পক্ষ আবার ১১টি উপপক্ষে বিভক্ত। সিক্সটি নাইন ও আরএস দুটিই সিটি মেয়রের অনুসারী উপপক্ষ।

গত ২২ জানুয়ারি বিকেলে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিজয়ের বিপক্ষে নিজেদের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ তোলে চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি)। এর জের ধরে বিকেল পাঁচটার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলে গিয়ে বিজয়ের তিন কর্মীকে মারধর করেন সিএফসির নেতা-কর্মীরা। ঘটনা জানাজানি হলে বিজয়ের নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হল এবং সিএফসির নেতা-কর্মীরা শাহ আমানত হলের সামনে জড়ো হন। এ সময় তাঁদের হাতে লোহার রড, লাঠিসোঁটা ও রামদা দেখা যায়। এ ঘটনার জেরে ক্যাম্পাসে অবরোধের ডাক দেয় বিজয়।

এ নিয়ে গত চার মাসে অন্তত পাঁচ বার নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। বিভিন্ন সময়ের এসব ঘটনায় ভাঙচুর করা হয় প্রক্টর ও পুলিশের গাড়ি, গোলচত্বরের ওয়াচ টাওয়ার এবং হলের কক্ষ।