নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ না রাখার ভাবনা সরকারের

Parlament
Parlament

মাধ্যমিক স্তরে নবম-দশম শ্রেণিতে গ্রুপ বা বিভাগ না রাখার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

জাতীয় পার্টির সাংসদ ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক স্তরে নবম-দশম শ্রেণিতে গ্রুপ বা বিভাগ না রাখার চিন্তাভাবনা চলছে। এ ক্ষেত্রে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী একই বিষয়ের ওপর শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে তাদের ভিতকে মজবুত করে একাদশ শ্রেণি থেকে গ্রুপ বা বিভাগভিত্তিক লেখাপড়া করার সুযোগ থাকবে।

আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার সংখ্যা ৭ হাজার ৬২৪ এবং এমপিওবিহীন মাদ্রাসার সংখ্যা ১ হাজার ৯১২। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আরও ৫৫৬টি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়াধীন আছে।


এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার ছাত্রসংখ্যা ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৮১২, ছাত্রী ১ লাখ ১৮ হাজার ৫১। এমপিওবিহীন মাদ্রাসায় ছাত্রসংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ৭২৪ ও ছাত্রী ১ লাখ ৮৭ হাজার ৮৯।

সরকারি দলের সাংসদ জাফর আলমের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নতুন প্রজন্মকে গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষায় শিক্ষিত করে এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ সমমানের উচ্চশিক্ষা, জ্ঞান, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি ও দক্ষতায় গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গবেষণায় গৃহীত পরিকল্পনার আওতায় অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্টের অর্থায়নে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে নন-লিনিয়ার অপটিকস গবেষণায় ক্যানসার শনাক্তকরণ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’ প্রতিরোধে কার্যকর ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করা হয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাটকাঠি থেকে টেকসই পার্টিকেল বোর্ড উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবিত বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তির স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিকতা থাকায় পর্যায়ক্রমে এগুলোর জন্য পেটেন্ট আবেদন দাখিলের প্রক্রিয়া চলছে।

সরকারি দলের সাংসদ এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, চলতি বছরে প্রাথমিক স্তরে ভর্তির হার ৯৭ দশমিক ৭৪ ভাগ। সারা দেশে বিদ্যালয় গমনোপযোগী শতভাগ শিশুকে ভর্তির জন্য সরকার গৃহীত সব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এবং তাদের পাঠদানে সম্পৃক্ত করার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। এর ফলে বিদ্যালয় গমনোপযোগী প্রায় শতভাগ শিশুকে ভর্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।

সরকারি দলের নূর মোহাম্মদের প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বয়স্ক সাক্ষরতার হারে পুরুষের চেয়ে নারীরা গড়ে ৫ শতাংশ পিছিয়ে আছেন। বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৩ দশমিক ৯ শতাংশ। পুরুষ সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৭ শতাংশ আর নারী সাক্ষরতার হার ৭১ দশমিক ২ শতাংশ।

বিএনপির সাংসদ জি এম সিরাজের প্রশ্নের জবাবে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা কার্যক্রমে মাথাপিছু মাসিক ৭৫০ টাকা হিসাবে ১৫ লাখ ৪৫ হাজার জনকে ১৩৯০ কোটি ৫০ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এই অর্থবছরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি কার্যক্রমে ৪টি স্তরে উপকারভোগীর সংখ্যা এক লাখ এবং বরাদ্দের পরিমাণ ৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, পুরান ঢাকার নাগরিক সমস্যা সমাধানে নগর পুনঃ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের পদক্ষেপ নিয়েছে রাজউক। এ–সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান। ইতিমধ্যে হাজারীবাগ ট্যানারি এলাকাকে একটি মিশ্র এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। নগর পুনঃ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের জন্য প্রাথমিকভাবে পুরান ঢাকার ইসলামবাগ, চকবাজার, মৌলভীবাজার, বংশাল, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও লালবাগে ৭টি সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সমীক্ষা প্রতিবেদন পরিচালনা করার জন্য টার্মস অব রেফারেন্সেস প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান।