অবাস্তব কোনো প্রতিশ্রুতি দিইনি: তাবিথ
ঢাকাকে বাসযোগ্য, আধুনিক ও টেকসই শহর হিসেবে গড়ে তুলতে ১৯ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তিনি বলেছেন, ‘অবাস্তব কোনো প্রতিশ্রুতি দিইনি। মেয়রের এখতিয়ারের মধ্যে থেকেই এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’
আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি মিলনায়তনে নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরেন তাবিথ আউয়াল। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০–এর অভীষ্ট অনুযায়ী টেকসই নগর গড়ে তুলতে এই ১৯ দফা নির্বাচনী ইশতেহার দেন তিনি।
তাবিথ আউয়াল বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে অগণিত চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে আছে রাজধানী ঢাকা। গত ১০ বছরে ঢাকা বসবাস অযোগ্য শহরে পরিণত হয়েছে। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁদের সঙ্গে জনগণের সমর্থন না থাকায় তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। এই অবস্থা থেকে জনগণ পরিত্রাণ চায়। নির্বাচিত হতে পারলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা হবে।
তাবিথের ১৯ দফা ইশতেহারে যেসব বিষয় রয়েছে, তার মধ্যে দূষণ রোধ, পরিচ্ছন্ন ঢাকা, যানজট ব্যবস্থাপনা, মশক নিয়ন্ত্রণ, গণপরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ খাদ্য, পার্ক ও বিনোদন, ইন্টেলিজেন্স সিটি অন্যতম। এ ছাড়া নগর সরকার ধারণার বাস্তবায়ন, নাগরিক সেবা ওয়ার্ড পর্যায়ে বিকেন্দ্রীকরণ, প্রতিটি ওয়ার্ডে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রক নিয়োগ, ঘর থেকে বর্জ্য সংগ্রহের প্রতিশ্রুতি রয়েছে তাবিথের ইশতেহারে।
মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে বছরব্যাপী কার্যক্রম নেবেন বলে জানান তাবিথ। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের অবহেলাতেই ডেঙ্গু রোগ বিস্তার পেয়েছে। মেয়র হলে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কর্মসূচি শুরু করব।’ তিনি জানান, ডেঙ্গুর ভাইরাস বহনকারী এডিস মশা ও লার্ভা নিধনে কার্যকর কীটনাশক প্রয়োগ, নিয়মিত মশার প্রবলতা পরীক্ষা ও জলাশয় পরিষ্কার করতে উদ্যোগ নেবেন।
তাবিথ আউয়াল ইশতেহারে এমন কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেগুলো রাজনৈতিক সরকার দীর্ঘ দিন ধরে সমাধান করতে পারছে না। শুধু ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়ে কীভাবে এসব সমস্যার সমাধান করবেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, বড় ক্ষমতা হলো জনগণ। মেয়রের এখতিয়ারের মধ্যে থেকেই এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
নিজের ইশতেহার বাস্তবায়নে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিতে চাননি তাবিথ। তিনি বলেন, ‘৯০ দিন, ১২০ দিনের কোনো আল্টিমেটাম দিতে চাই না। নির্বাচিত হলে প্রথম দিন থেকেই কাজ শুরু করব। ২৪ ঘণ্টাই নাগরিক সেবায় নিয়োজিত থাকতে হবে। কিছু ফল পেতে হয়তো সময় লাগবে, কিন্তু কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’
বিরোধী দলের প্রার্থী হিসেবে মেয়র হয়ে কাজ করার কতটা সুযোগ পাবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, সৎ ইচ্ছা, সৎ মন ও জনগণের সমর্থন থাকলে বিরোধী দলে থেকেও কাজ করা সম্ভব। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এ ক্ষেত্রে উজ্জ্বল উদাহরণ।
ইশতেহার ঘোষণার সময় তাঁর সঙ্গে মঞ্চে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. ইব্রাহিম, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।