নির্বাচনের আচরণবিধি আমাদেরই করা: এইচ টি ইমাম

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিং করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। ছবি: আহমেদ দীপ্ত
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিং করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। ছবি: আহমেদ দীপ্ত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো–চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছেন, ‘এই যে নির্বাচনী আচরণবিধি দেখছেন, এগুলো আমাদেরই করা। আমরা এগুলো মেনে চলছি। আমাদের কোনো সংসদ সদস্য নির্বাচনী প্রচারে যাচ্ছেন না। আমাদের বড় নেতাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আজ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

ফুটপাতে ক্যাম্প স্থাপন ও বড় বড় পোস্টার লাগিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে, বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘এটা তো নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব, রিটার্নিং অফিসারদের দায়িত্ব। তাঁরা এটা দেখছেন। তাঁরা বলছেন, এখন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেট, মোবাইল কোর্টের সংখ্যা কম ছিল। মঙ্গলবার থেকে মোবাইল কোর্ট বাড়ানো হবে। পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের সময় যৌথ বাহিনী একসঙ্গে টহল দেবে। পরিষ্কার বলাই ভালো, নির্বাচনের সময়ে নির্বাচন কমিশনের যে আচরণবিধি আপনারা দেখছেন, এগুলো আমাদেরই করা। আমরা এগুলো মেনে চলছি।’

ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী প্রচারে হামলার ঘটনাকে সাজানো ও পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘ইসিকে এই ঘটনার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমাদের কাছে তথ্যপ্রমাণ আছে। গতকালের পুরো ঘটনাটি সাজানো, পূর্বপরিকল্পিত। গতকাল যে আক্রমণ করা হয়েছে, যে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোর তথ্য ইসিকে দেওয়া হয়েছে। আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন, হাসপাতালেও আছেন।’

এইচ টি ইমামের দাবি, ‘বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ইশরাক নিজেই অন্যদের গায়ে হাত তুলছেন, মারতে যাচ্ছেন, এর প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। আমাদের লোক ছিল ৫০ থেকে ৬০ জন। আর তাদের ছিল প্রায় ৫০০ জন। এত লোক সংগ্রহ করে এনে আক্রমণ করা রীতিমতো পরিকল্পনার ব্যাপার।’

এইচ টি ইমাম আরও বলেন, বিএনপি প্রথমে বলেছিল, এই সরকারের সময়ে নির্বাচন হতে পারে না। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না, এমনটাও বলেছে তারা। যে নির্বাচন কমিশনের ওপর তাদের আস্থা নেই, সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই তারা নির্বাচন করছে এবং বলছে জিতেও যাব। এ বিষয়গুলো রহস্যজনক।

নির্বাচনী পরিবেশ কেমন দেখছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। গোপীবাগের ঘটনা দিয়ে তারা পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। শান্তি-শৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে, যাতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়, দলগতভাবে আপ্রাণ সেই চেষ্টা করছি আমরা।’

ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক একটি ভিডিও সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই ভিডিওতে আছে, কীভাবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে বিএনপি হামলা করেছে। তখন নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ নামাজে গিয়েছিলেন, কেউ দুপুরে খেতে গিয়েছিলেন। মাত্র ৫০ থেকে ৬০ জন উপস্থিত ছিলেন। তখন ইশরাক হোসেন কীভাবে নিজের হাতে হামলা করেছেন দেখলে অবাক হবেন। তারা পরাজয় নিশ্চিত জেনেই এটা করেছে। পরিস্থিতি ঘোলা করার জন্য সারা দেশ থেকে অবৈধ অস্ত্রধারীদের জড়ো করা হয়েছে।

বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শুরু হওয়া ইসির সঙ্গে এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, আ. লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিয়াজুল কবির, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।