মৌসুম শেষ দিকে, তবু পেঁয়াজের দাম চড়া

পেঁয়াজের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে খোলাবাজারে বিক্রিও চলছে। তবু রংপুর নগরে পেঁয়াজের দাম কমছে না। পাশাপাশি আদা, রসুনসহ শীতকালীন সবজির দামও বেশি।

গতকাল সোমবার নগরের সিটি বাজারে নতুন দেশি পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। গত বছর এ সময় এ পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ও চাষিরা জানান, ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো রংপুরেও পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে যায়। এরপর সরকার মিসরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে বিক্রি শুরু করে। এরপরও দাম খুব একটা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এর মধ্যে দেশে পেঁয়াজের মৌসুম শুরু হয়। চাষিরা বেশি লাভের আশায় পরিপক্ব হওয়ার আগেই খেত থেকে তুলে পাতাপেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেন। তখন দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ভরা মৌসুম পার হওয়ার পর এখনো পেঁয়াজের দাম নাগালের মধ্যে আসেনি। বরং খেতের পেঁয়াজ কমে যাওয়ায় নতুন করে দাম বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গতকাল সকালে রংপুরের প্রধান সিটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ১১০-১২০ টাকা। আর পাইকারি বাজারে এ পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৯০ টাকা।

এ বাজারে পেঁয়াজের খুচরা ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘গত বছর এই সময় দেশি পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। কিন্তু এবার পেঁয়াজের আমদানি না থাকায় এ অবস্থা হয়েছে।’ পাইকারি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এবার চাষিরা লাভের আশায় অপরিপক্ব থাকতেই খেত থেকে পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করেছেন। নতুন করে দ্বিতীয় দফায় চাষ করা হলেও সেই পেঁয়াজের ফলন খুব একটা ভালো হবে না। তাই পেঁয়াজ নিয়ে আমাদের অস্বস্তিতে থাকতে হচ্ছে।’

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পালিচড়া গ্রামের পেঁয়াজচাষি শাহজাহান মিয়া বলেন, এ বছর তিনি ৬০ শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। পাতাপেঁয়াজের দাম ভালো পাওয়ায় খেতের পুরো পেঁয়াজ অপরিপক্ব থাকা অবস্থায় বিক্রি করেছেন। আবার ২০ শতক জমিতে পেঁয়াজ বুনেছেন। কিন্তু এই পেঁয়াজের ফলন তেমন ভালো হবে না।

বলদিপুকুর এলাকার শাহ আলম এ বছর ২৫ শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেন। তিনিও দাম ভালো পাওয়ায় পাতা অবস্থায় তা বিক্রি করেছেন। এরপর ১০ শতক জমিতে আবার পেঁয়াজ করেছেন। তিনি বলেন, শীত বেশি হওয়ায় পেঁয়াজ গাছ অনেকটা নষ্ট হয়েছে। তাই খুব একটা ফলন পাওয়া যাবে না।

এদিকে নগরের ১০টি স্থানে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। এদিকে বাজারে শীতকালীন সবজির দামও কম নয়। রসুনের কেজি ১৭০-১৮০, আদা ১৬০-১৭০ টাকা, যা গত বছর একই সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ। প্রতি কেজি বেগুন প্রকারভেদে ৩০-৩৫, আলু ২২-৩২, শিম ৪৫ ও ফুলকপি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।