উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরের খ্রিষ্টানপল্লিতে হামলায় আহত ৮

কক্সবাজারের উখিয়ার মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা বসতি। প্রথম আলো ফাইল ছবি
কক্সবাজারের উখিয়ার মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা বসতি। প্রথম আলো ফাইল ছবি

কক্সবাজার জেলার উখিয়ার কুতুপালং মেগা ক্যাম্পের খ্রিষ্টানপল্লিতে রোহিঙ্গা মুসলমানরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ১৭টি খ্রিষ্টান পরিবারের বসতি ভাঙচুর হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আটজন। গত রোববার রাত ১১টার দিকে কুতুপালং-২ ইস্টক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে। আবার হামলার আশঙ্কায় গত সোমবার রাতে ১৭ পরিবারের ৭০ জন খ্রিষ্টানকে কুতুপালং শিবিরের জাতিসংঘের ট্রানজিট সেন্টারে সরিয়ে রাখা হয়েছে। তাঁদের নিরাপত্তায় সেখানে পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে উখিয়ার বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নেওয়ার পর শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিষ্টান হন। এত দিন তাঁদের কুতুপালং মেগা ক্যাম্পে আলাদাভাবে রাখা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খ্রিষ্টানপল্লিতে কে বা কারা ঢিল ছোড়ে। এ নিয়ে হইচই শুরু হয়। খ্রিষ্টানপল্লির কাছেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের বসতি। রাত ১১টার দিকে এক রোহিঙ্গা যুবক খ্রিষ্টানপল্লির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হামলা চালায় খ্রিষ্টানরা। এ নিয়ে খ্রিষ্টান এবং রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই পল্লির ৭০ জন খ্রিষ্টান নিরাপদে সরিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে পুলিশ ও আনসার মোতায়েন রাখা হয়েছে।

খ্রিষ্টান নেতা মো. নুরু ফকির বলেন, রোববার রাতে আবদুস শুক্কুর (২৫) নামের এক রোহিঙ্গা যুবক খ্রিষ্টানপল্লি দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ধর্মান্তরিত হওয়া নিয়ে অহেতুক খ্রিষ্টানদের গালমন্দ শুরু করেন। এ নিয়ে খ্রিষ্টানদের সঙ্গে ওই যুবকের কথা-কাটাকাটি ও পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে পার্শ্ববর্তী শিবিরের কয়েক শ রোহিঙ্গা খ্রিষ্টানপল্লিতে নারকীয় তাণ্ডব চালায়। রাত ১২টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে খ্রিষ্টানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। রোহিঙ্গার হামলায় আহত আটজনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

তবে কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা কমিউনিটির সেক্রেটারি মোহাম্মদ নুর বলেন, ধর্মান্তরিত খ্রিষ্টানদের হামলায় গুরুতর আহত হয় রোহিঙ্গা যুবক আবদুস শুক্কুর। তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ রোহিঙ্গারা খ্রিষ্টানপল্লিতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে।

কুতুপালং মধুরছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোবারক হোসেন বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল মনসুর বলেন, খ্রিষ্টানপল্লিতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। মামলা করতে কেউ আসেননি। তবে ১৭ পরিবারের ৭০ জন খ্রিষ্টানকে কুতুপালং শিবিরের জাতিসংঘের ট্রানজিট সেন্টারে সরিয়ে আনা হয়েছে।