চট্টগ্রামে বিএনপির ৪০ কর্মী কারাগারে

নাশকতার মামলায় চট্টগ্রাম নগর বিএনপির ৪০ কর্মীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণ, ২৮ জানুয়ারি। ছবি: জুয়েল শীল
নাশকতার মামলায় চট্টগ্রাম নগর বিএনপির ৪০ কর্মীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণ, ২৮ জানুয়ারি। ছবি: জুয়েল শীল

চট্টগ্রামে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপির ৪০ কর্মীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

কারাগারে পাঠানো আসামিদের সবাই নগরের ডবলমুরিং ও বন্দর থানা বিএনপির কর্মী। তাঁদের মধ্যে সাইদুল আলম, মো. মিরাজ, মো. আদনান, সবুজ গাজী, তানভীর হোসনে, শাহজাহান, রায়হান চৌধুরী, মো. ইয়াছিন, মো. ওয়াহিদ, মো. সাব্বির ও মো. ইমরান রয়েছেন। ৬৫ বছর বয়সী বাদশা আলমসহ সাত আসামি জামিন পান।

২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার ৩২ থানায় নাশকতার অভিযোগে মামলা হয়েছে ২৩২টি। এর মধ্যে শুধু অক্টোবর মাসেই হয় ১০৩টি মামলা। এসব মামলায় বিএনপি-জামায়াত ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করেছে পুলিশ।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর নগরের ডবলমুরিং থানার পান্নাপাড়া এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ ও নাশকতার অভিযোগে বিস্ফোরক এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় করা পৃথক দুই মামলা এবং বন্দর থানার নাশকতার মামলায় ৪৭ আসামি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আজ দুপুর থেকে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় ভিড় করতে থাকেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিকেলে শুনানি শুরু হওয়ার আগে ৪৭ আসামি এজলাসে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ান।

শুনানিতে বিএনপির কর্মীদের জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী আহমদ কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ। তিনি আদালতকে বলেন, আসামিরা সবাই হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছিলেন। তাঁরা কেউ পুলিশের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ কিংবা নাশকতার সঙ্গে জড়িত নন। যেসব মামলায় তাঁদের আসামি করা হয়েছে, এগুলো সম্পূর্ণ গায়েবি মামলা। ওই ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। শুধু বিএনপির রাজনীতি করার কারণে তাঁরা মামলার আসামি হয়েছেন। নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি অনেক সাধারণ মানুষও গায়েবি এসব মামলার আসামি। তাঁদের জামিন মঞ্জুর করা হোক। জামিনে থাকলে তাঁরা কোনো ধরনের অপরাধে জড়াবেন না। এখন সেই পরিস্থিতিও নেই।

ওই সময় রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, তাঁরা সবাই পুলিশের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ মামলার আসামি। জামিনে থাকলে পরিস্থিতির আবারও অবনতি ঘটাতে পারেন। বর্তমানে উন্নয়নে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তা বাধাগ্রস্ত করতে পারেন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ৪০ জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁদের চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন। বাকি সাতজনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। তাঁদের বেশির ভাগই অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ।

কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে আসামিরা পুলিশের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা কেউই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।