দুই ব্যবসায়ী ও চালক-সহকারীকে খালে ফেলে ট্রাকসহ ২৪ গরু লুট

নাটোর
নাটোর

নাটোরের লালপুর উপজেলায় ২৪টি গরুসহ একটি ট্রাক লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুই গরু ব্যবসায়ী, ট্রাকের চালক ও সহকারীকে হাত বেঁধে কর্দমাক্ত খালে ফেলে দেওয়া হয়। দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে চালক ও সহকারী আহত হয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে উপজেলার কদিমচিলান এলাকায় নাটোর-যশোর মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে কোনো টহল পুলিশ ছিল না। অথচ একই স্থানে এর আগেও বহুবার ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

নাটোরের বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী গরু ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জ হাট থেকে ২৩টি এঁড়ে ও একটি গাভি কিনে নিয়ে ট্রাকে (খুলনা-ন-১১-০০০৭) করে যশোর ফিরছিলেন দুই গরু ব্যবসায়ী। সন্ধ্যা সাতটার সময় রওনা হওয়ার পর তাঁরা মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে লালপুরের কদিমচিলান এলাকায় সাদিয়া পেট্রল পাম্পের পাশে পৌঁছালে অপর একটি ট্রাক সড়কে আড়াআড়ি করে রেখে গরুবাহী ট্রাকটিকে আটকে দেয়।

পরে ট্রাকের চালক শিমুল সরকার (২৫) ও তাঁর সহকারী টিটু হোসেনকে (২০) ট্রাক থেকে নামিয়ে হাত বেঁধে ফেলা হয়। তাঁদের ছুরিকাঘাতে আহত করে সড়কের পাশের কর্দমাক্ত খালে ফেলে দেওয়া হয়। এ সময় ট্রাকের পেছনে থাকা গরু ব্যবসায়ী যশোরের কেশবপুরের বিধান দাস (৪৬) ও আবু বক্কর শেখ (৩৬) ট্রাক থেকে নেমে এলে তাঁদেরও হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে খালে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর দুর্বৃত্তরা গরুসহ ট্রাকটি নিয়ে পুব দিকে চলে যায়।

চালক শিমুল সরকারের ভাষ্য, দুর্বৃত্তরা আট থেকে ১০ জন ছিল। ট্রাকটি নিয়ে যাওয়ার পর তাঁরা মুখ দিয়ে পরস্পরের হাতের দড়ি খুলে পেট্রল পাম্পে আসেন। পাম্প থেকে হাইওয়ে পুলিশের মুঠোফোনে ফোন দিয়ে গরু লুটের কথা জানান। পুলিশ এসে তাঁদের বনপাড়ার পাটোয়ারী হাসপাতালে ভর্তি করে।

গরু ব্যবসায়ী আবু বক্কর শেখ জানান, ট্রাকে তাঁদের নয় লাখ টাকারও বেশি গরু ছিল। এ ছাড়া দুর্বৃত্তরা তাঁদের কাছে থাকা নগদ দুই হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন নিয়ে গেছে। ঘটনার প্রায় ঘণ্টাখানেক পর পুলিশ সেখানে যায় এবং তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।

পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালের মালিক, চিকিৎসক ও বড়াইগ্রাম উপজেলার চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, ট্রাকচালক ও তাঁর সহকারীকে ছুরি দিয়ে পায়ে ও মাথায় জখম করা হয়েছে। তবে তাঁরা শঙ্কামুক্ত। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে এর আগেও বহুবার গরু লুটসহ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেখানে হাইওয়ে পুলিশের নিয়মিত টহল দলের থাকার কথা। কিন্তু ঘটনার সময় পুলিশ ছিল না বলে তিনি জেনেছেন।

গরুসহ ট্রাক লুটের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, গরুসহ ট্রাকটি উদ্ধারের জোরালো চেষ্টা চলছে। ওই সড়কে তাঁদের নিয়মিত টহল দল ছিল। তবে ঘটনার সময় তাঁরা ঘটনাস্থলে না থাকায় গরু লুট হয়েছে। জনবল সীমিত হওয়ায় শুধু ওই স্থানের জন্য পুলিশ রাখা সম্ভব হয় না বলেও তিনি জানান।