সাক্ষীকে রেখে সটকে পড়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

পাবনায় পুলিশ কর্মকর্তার সামনে ধর্ষণ মামলার সাক্ষীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত
পাবনায় পুলিশ কর্মকর্তার সামনে ধর্ষণ মামলার সাক্ষীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

পাবনায় ধর্ষণ মামলার সাক্ষীকে বিপদের মুখে ফেলে পালানোর ঘটনায় ‘গাফিলতির দায়ে’ পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাইরুল ইসলামকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি পুলিশ সদর দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামিমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, দুটি বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। একটি হলো পুলিশ কর্মকর্তা মামলার সাক্ষী হতে ডাকা ব্যক্তিকে আসামিপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন কি না। অপর বিষয়টি হলো পুরো ঘটনায় ওই পুলিশ কর্মকর্তার কোনো গাফিলতি ছিল কি না। তদন্তে আসামিপক্ষের হাতে সাক্ষী হতে ডাকা ব্যক্তিকে তুলে দেওয়ার কোনো প্রমাণ মেলেনি। তবে ঘটনায় ওই কর্মকর্তার কিছু গাফিলতি ছিল। তদন্ত শেষে প্রতিবেদনটি পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি ও জেলা সদরের মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামের ভাই আরিফুল ইসলামকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর থেকেই আরিফুলকে খোঁজা হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শুক্রবার ঢাকার একটি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জেলা সদরের এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। গত ২২ ডিসেম্বর মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে মালিগাছা ইউপির চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামসহ আটজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। মামলাটির তদন্ত করছিলেন সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাইরুল ইসলাম। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৭ জানুয়ারি বিকেলে আবদুল আলীম (৩৬) নামের এক ব্যক্তিসহ কয়েকজনকে জেলা সদরের গাছপাড়া মোড়ে একটি চায়ের দোকানে ডাকেন। সেখানে ধর্ষণ মামলার আসামি ও ইউপির চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামের ভাই আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ জনের একদল যুবক আবদুল আলীমকে ঘেরাও করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে খাইরুল ইসলাম ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এ সময় আবদুল আলীমকে হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়। সাক্ষীকে ফেলে রেখে পুলিশের পালিয়ে যাওয়া ও মারপিটের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে আহত আবদুল আলীমের স্ত্রী রুমা খাতুন বাদী হয়ে গত সোমবার ১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।