লিবিয়া থেকে ফিরলেন ১৪৮ বাংলাদেশি

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

পরিবারের ভাগ্য বদলাতে চার বছর আগে লিবিয়ায় যান ঝিনাইদহের মো. আকবর। ভাগ্য বদলানো তো দূরের কথা, স্বল্প বেতনে নিজের খরচ মেটাতেই হিমশিম খেতেন। যেখানে কাজ করতেন, হঠাৎ করেই সেখানে হয় বিমান হামলা। হামলায় চার বাংলাদেশিসহ মারা যান ১৩ জন। অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। এরপরই দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল মঙ্গলবার আকবরসহ ১৪৮ বাংলাদেশি ভাড়া করা একটি বিশেষ উড়োজাহাজে দেশে ফিরেছেন।

আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। লিবিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে দেশে ফেরার জন্য লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেন অনেকে। দূতাবাসের সহায়তায় তাঁদের যোগাযোগ ঘটে আইওএমের সঙ্গে। এরপর জাতিসংঘের এ সংস্থার খরচ ও তত্ত্বাবধানেই দেশে ফিরেছেন তাঁরা। ফিরে আসা ১৪৮ জনের মধ্যে আটজন শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাঁদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে সহায়তা করেছে আইওএম।

আইওএম জানিয়েছে, সংস্থাটির ভলান্টারি হিউম্যানিটারিয়ান রিটার্ন (ভিএইচআর) কর্মসূচির মাধ্যমে লিবিয়া থেকে ১৪৮ জন বাংলাদেশি নিরাপদে দেশে ফিরেছেন। অভিবাসীদের ফিরিয়ে আনতে একটি বিশেষ ভাড়া করা বিমানের ব্যবস্থা করে আইওএম। গতকাল লিবিয়ার মিসারত বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়ে আজ দুপুরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় বিমানটি। ফিরে আসা অভিবাসীদের মধ্যে আছে যুদ্ধে আহত, সমুদ্রপথে ইউরোপ যেতে ব্যর্থ এবং লিবিয়ার জেলে বন্দী থাকা অভিবাসীরা।

ফিরে আসা অভিবাসীরা আইওএমের লিবিয়া কার্যালয় থেকে তাৎক্ষণিক সেবা, ফিরে আসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বাংলাদেশ সরকারের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগসহ নানা ধরনের সহায়তা পেয়েছেন। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে আইওএম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাড়ি ফেরার জন্য প্রত্যেকে ৪ হাজার ৭৩০ টাকা করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া খাবার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মানসিক সেবাও পেয়েছেন। ভবিষ্যতেও এই অভিবাসীদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা করবে আইওএম।

আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন গিওর্গি গিগাওরি বলেন, ‘লিবিয়ায় প্রতিকূল অবস্থা অব্যাহত থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাংলাদেশিদের সুরক্ষা ও সহায়তা দিতে আমরা সব সময় তৎপর। যাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন, তাঁদের তাৎক্ষণিক সব ধরনের সহযোগিতা নিশ্চিত করছি আমরা। একই সঙ্গে ফিরে আসা অভিবাসীদের দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতাও করব।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ সরকার ও লিবিয়া কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি বাংলাদেশিকে দেশে ফিরতে সহযোগিতা করছে আইওএম।