ব্যাংক কর্মকর্তার ভুয়া পরিচয়ে এটিএম কার্ডের তথ্য নিয়ে টাকা উত্তোলন, এক ব্যক্তি রিমান্ডে

ভুয়া পরিচয় দিয়ে ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের এক গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় এক ব্যক্তিকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এই আদেশ দেন।

আসামির নাম ফিরোজ খন্দকার (৩০)। তাঁর গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার থানামাত্তা গ্রামে। এর আগে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল কবির সরকার আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। গতকাল মঙ্গলবার ফিরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের গ্রাহক তামান্না আফরুজ। তাঁর বাবা জহিরুল হক সরকার মামলায় অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের এটিএম কার্ড ব্যবহার করতেন। গত বছরের ২৫ মে বাড্ডা লিংক রোডের ফাস্ট ট্রাকে তাঁর (তামান্না) সঞ্চয়ী হিসাবে পাঁচ হাজার টাকা জমা রাখেন। সেদিন সন্ধ্যার সময় ১৬২১৬ নম্বরে তামান্নার মুঠোফোনে একটা কল আসে। অজ্ঞাত লোক নিজেকে ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে তামান্নাকে বলেন, “আপনার অ্যাকাউন্টের তথ্য না দিলে আপনার জমা করা টাকা হিসাবে জমা হবে না।” তখন তামান্নার সন্দেহ হয়। তিনি ফোন কেটে দেন। এর কিছুক্ষণ পর আবার আরেকটি রবি নম্বর ব্যবহার করে তামান্নার মুঠোফোনে কল আসে। তখনো বলা হয়, ব্যাংক হিসাবের তথ্য দেওয়া হলে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হবে, ব্যাংক হিসাব চালু থাকবে। টাকা জমা দেওয়ার তথ্যসংবলিত খুদে বার্তা গ্রাহকের (তামান্না) মুঠোফোনে যাবে। এ সময় তামান্না ওই ব্যক্তিকে তাঁর ব্যাংক হিসাবের তথ্য দেন। এরপর তামান্নার মুঠোফোনে টাকা জমা দেওয়ার খুদে বার্তা আসে। ওই দিন রাতে সাড়ে আটটার দিকে তামান্না এটিএম কার্ড ব্যবহার করে টাকা তুলতে গেলে কার্ডটি আটকে যায়। পরে তামান্না কুমিল্লায় গিয়ে নতুন একটি এটিএম কার্ড ওঠান, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সচল হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ২৯ মে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে তামান্নার ব্যাংক হিসেব থেকে ৩৩ হাজার ২০০ টাকা তুলে নেওয়া হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এসআই নাজমুল কবির সরকার আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে বলেন, ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের ওই গ্রাহকের টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনার সঙ্গে এই আসামি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, আসামি ফিরোজ খন্দকার নেক্সাস পে প্রতারণা চক্রের সদস্য। ওই টাকা তুলে নেন ওই আসামি। ওই নারীসহ আরও অনেক লোককে ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতারক চক্রের মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করার জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।