ছেলের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ মায়ের

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সাবেক অফিস সহকারী মো. শামিম মাহমুদের বিরুদ্ধে মাদক সেবন, জোরপূর্বক মায়ের জমি, দোকানঘর দখলসহ মাকে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার বেলা দুইটায় ভোলা শহরের একটি পত্রিকার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মা সাহানা পারভীন এসব অভিযোগ করেন।

এর আগে শাহানা পারভীন ছেলের বিচার চেয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের কাছে আবেদন করেছিলেন। এই বিষয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক প্রথম আলোকে বলেন, মায়ের কাছে থেকে ছেলের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগ তিনি আমলে নিয়েছেন। এরপর তিনি তাৎক্ষণিক শামিম মাহমুদকে মনপুরা উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে বদলি করেছেন। এ ছাড়া তিনি তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

মাদক সেবন, মায়ের জমি ও দোকানঘর দখল এবং মাকে নির্যাতন করার অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য গতকাল চরফ্যাশন উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী মো. শামিম মাহমুদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি তা ধরেননি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ম সাহানা পারভীন (৫৯)। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তাঁর বাড়ি চরফ্যাশন উপজেলার চরফ্যাশন পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শরীফপাড়ায়। তিনি দীর্ঘ প্রায় ৪৩ বছর ধরে এ বাড়িতে বসবাস করছেন। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। তিনি ছোট ছেলে মো. মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে থাকেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে বড় ছেলে ১৬ বছর ধরে পৃথক বসবাস করছে।

মা সাহানা পারভীন বলেন, ‘শরীফপাড়ার বাড়িতে তাঁর নামে ৮২ শতাংশ জমি ছিল। এ জমি থেকে বড় ছেলে মো. শামিম ও ছোট ছেলে মাহমুদুল হাসানকে ১০ শতাংশ করে ২০ শতাংশ জমি লিখে দিই। এ ছাড়া সন্তানদের প্রয়োজনে ২২ শতাংশ জমি বিক্রি করে টাকা সমভাবে বণ্টন করে দিয়েছি। বর্তমানে মাত্র ৩৭ শতাংশ জমি আছে।’

সাহানা পারভীন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার দখলে থাকা ৩৭ শতাংশ জমির মধ্যে ৮ দশমিক ২৮ শতাংশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বাকি জমিতে বসতঘর, চলাচলের পথ, উঠানসহ অন্যান্য স্থাপনা। কষ্টের বিষয়, বড় ছেলেকে (শামিম) সবকিছু সমানভাবে বণ্টন করে দিলেও সে বাড়ির ৬ শতাংশ জমি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের দুটি ঘর জোর করে ভোগদখল করেছে। ওই ঘরগুলো ভাড়া দিয়ে আমি সংসার চালাই। বড় ছেলে সেই দোকানগুলো তার নামে লিখে দিতে চাপ আমার ওপর প্রয়োগ করছে। কিন্তু জমি লিখে না দেওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এবং মাদকাসক্ত বন্ধুদের দিয়ে আমার ছেলে আমার ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। সম্প্রতি সে স্থানীয় মাস্তানদের দিয়ে দোকানের ভাড়াটেদের মারধর করে দোকান থেকে বের করে দিয়েছে।’

সাহানা পারভীন আরও অভিযোগ করেন, তাঁর বড় ছেলে নিয়মিত বন্ধুদের নিয়ে মাদক সেবন করে। এ কারণে তার অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই সরকারি চাকরি করার পরেও মাদকের টাকা জোগাড় করতে পরিবারের লোকজনকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং এলাকায় বসবাস করতে ভয় পাচ্ছেন। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি বাড়ির বাইরে অবস্থান করছেন। তিনি দাবি করেন, তদন্ত করলে অভিযোগগুলোর সত্যতা পাওয়া যাবে।