একতারার ভাস্কর্যে পূর্ণতা পেল আখড়াবাড়ি

আখড়াবাড়িতে দৃষ্টিনন্দন একতারা। সাম্প্রতিক ছবি।  প্রথম আলো
আখড়াবাড়িতে দৃষ্টিনন্দন একতারা। সাম্প্রতিক ছবি। প্রথম আলো

ফকির লালন শাহের গান ও একতারার সুর যেন অবিচ্ছেদ্য। একতারার সুরেই গান বাঁধতেন তিনি। সেই একতারার ভাস্কর্য স্থান পেল কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আখড়াবাড়ির সামনে।

বাউল ও দর্শনার্থীরা বলছেন, এত দিন আখড়াবাড়ি ফাঁকা ফাঁকা লাগত। একতারা স্থাপন করায় পূর্ণতা পেয়েছে।

১ জানুয়ারি ১৬ ফুট লম্বা একতারার ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছে। লালন একাডেমি সূত্রে জানা যায়, আখড়াবাড়িতে লালন শাহের সমাধির সামনে গত ডিসেম্বরে একতারা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কুষ্টিয়ার ছেলে জাকারিয়া ইসলাম এটি নির্মাণ করেছেন। পুরো কাঠামো কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে তৈরি। ভূমি থেকে কাঠামোসহ একতারাটি ১৬ ফুট লম্বা। লাউ পাকলে যে রং হয়, সেই রং দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে একতারা। এক হাত দিয়ে ধরা একতারা, এক আঙুল তারে রাখা।

লালন একাডেমির সদস্য সেলিম হক বলেন, লালন একাডেমি সদস্যসচিব ও সহকারী কমিশনার এ বি এম আরিফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে জাকারিয়া ইসলাম একতারাটি মাত্র এক মাসেই নির্মাণ করেছেন।

আরিফুল ইসলাম বলেন, একতারা বাউলগানের প্রধান অনুষঙ্গ। লালন শাহ তাঁর গানে একতারায় সুর তুলতেন। একতারা হাতে তিনি গানের মজমা বসাতেন। লালনের সেই স্মৃতিকে ধরে রাখতেই আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণে একটি একতারা নির্মাণ করা হয়েছে।

কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, লালন আখড়ায় এত দিন এ ধরনের কোনো নিদর্শন না থাকায় অনেকটা ফাঁকা ফাঁকা দেখা যেত। একতারাটি লালনকে আরও বেশি করে মনে করিয়ে দিচ্ছে।

প্রবীণ বাউল ও লালন অনুসারী বজলু শাহ বলেন, মূলত একতারা দিয়েই গানে সুর তুলতেন লালন। আখড়াবাড়িতে একতারা নির্মাণ করার মধ্য দিয়ে লালন ফকিরের স্মৃতিকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে।

লালন একাডেমির সভাপতি জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, ফকির লালন শাহ ও একতারা একে অপরের পরিপূরক। লালনের গানের প্রধান হাতিয়ার ছিল একতারা। এখনও লালন অনুসারীরা একতারা হাতেই গান পরিবেশন করেন। লালনের স্মৃতিকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতেই আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণে একতারা নির্মাণ করা হয়েছে।