নির্যাতনের শিকার তিন ছাত্র তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার চার ছাত্রের মধ্যে তিনজন তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন৷

গতকাল বুধবার ছিল কমিটির চতুর্থ কার্যদিবস৷ এদিন পর্যন্ত নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত অনেকেরও সাক্ষাৎকার নিয়েছে তদন্ত কমিটি৷

২১ জানুয়ারি রাতে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে চার ছাত্রকে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে ব্যাপক মারধর করেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রাতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা নির্যাতনের পর চার ছাত্রকে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। পরদিন দুপুরে তাঁদের ছেড়ে দেয় পুলিশ৷

নির্যাতনের শিকার চার ছাত্র হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সানওয়ার হোসেন, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মুকিমুল হক চৌধুরী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মিনহাজ উদ্দীন ও আরবি বিভাগের আফসার উদ্দীন। তাঁদের মধ্যে মুকিমুল ছাড়া অন্য তিনজন তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।

থানা থেকে ছাড়া পেয়ে এই ঘটনার বিচার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়েছিলেন মুকিমুল। পরদিন তাঁর বাবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এখন মুকিমুল ও তাঁর বাবা চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন৷

মুকিমুলের মা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, মুকিমুল ও তাঁর বাবা দুজনই অসুস্থ৷ এ কারণে তদন্ত কমিটি ডাকলেও মুকিমুল যেতে পারেনি৷

মুকিমুলের মা বলেন, ‘ছেলের মার খাওয়ার কথা শুনে আমার স্বামীর স্ট্রোক হয়৷ আমার কিছু ভালো লাগছে না। ছেলেকে নিয়ে ভয়ে আছি৷ ’

অভিযোগে থাকা ছাত্রলীগ নেতা আমির হামজা, আনোয়ার হোসাইন ও কামাল উদ্দিনকে নির্যাতনের ঘটনার পরও ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় দেখা গেছে। ছাত্রলীগ এখনো তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর ‘ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথা ভাবা যাবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের এক শীর্ষ নেতা৷

নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে গত ২৩ জানুয়ারি জহুরুল হক হল প্রশাসন একটি কমিটি করে৷ কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে৷ গতকাল ছিল কমিটির চতুর্থ কার্যদিবস।

কমিটির প্রধান ও হলের আবাসিক শিক্ষক মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, মুকিমুল ছাড়া অভিযোগকারী অন্য তিন ছাত্রের সাক্ষাৎকার তাঁরা নিয়েছেন৷ যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের অনেকের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে৷ অভিযোগকারীদের সহযোগিতা না পেলে যথাসময়ে প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে৷