অবৈধ দখলে ৬২ হাজার ৫৩৭ একর খাসজমি

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ফাইল ছবি
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ফাইল ছবি

সারা দেশে ৬২ হাজার ৫৩৭ দশমিক ৩৮ একর খাসজমি অবৈধ দখলদারদের দখলে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জানান, সারা দেশে ৬২ হাজার ৫৩৭ দশমিক ৩৮ একর খাসজমি অবৈধ দখলদারদের দখলে রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৫ হাজার ৫৪ দশমিক ১৯ একর, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪ হাজার ৮৫৯ দশমিক ৯৮ একর, খুলনায় ৩ হাজার ৪৪৫ দশমিক ৭৬ একর, রংপুরে ৭ হাজার ৩৮৭ দশমিক ৭৭ একর, ময়মনসিংহে ১ হাজার ৩৯৩ দশমিক ৮১ একর, বরিশালে ৪ হাজার ৬৯ দশমিক ৬১ একর, সিলেটে ৫ হাজার ১৬৪ দশমিক ৬৫ একর এবং রাজশাহী বিভাগে ১ হাজার ১৬১ দশমিক ৬১ একর খাসজমি অবৈধ দখলে রয়েছে।

মন্ত্রী জানান, খাসজমি উদ্ধারের জন্য নিয়মিত পরিদর্শনের বিষয়ে সব জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অবৈধ দখলদারদের তালিকা করে এসব জমি সরকারের দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, বর্তমানে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩১১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মানী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত বছরের মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতার পরিমাণ বেশ কয়েক গুণ বাড়িয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে মাসিক ১২ হাজার টাকা সম্মানী ভাতাসহ দুটি উৎসব ভাতা ১০ হাজার টাকা হারে দেওয়া হচ্ছে। গত অর্থবছর থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতার পাশাপাশি বাংলা নববর্ষ ভাতা বাবদ জনপ্রতি ২ হাজার টাকা এবং ভাতাপ্রাপ্ত জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের মহান বিজয় দিবস ভাতা বাবদ জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।

সরকারি দলের সাংসদ ফরিদুল হক খানের প্রশ্নের জবাবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, বাংলাদেশ বিমান ও অব্যবস্থাপনা সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে এবং অব্যবস্থাপনার কারণেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বিমানের সব ফ্লাইট—এ কথা সঠিক নয়। তবে কিছু অনিয়ম রয়েছে, যা প্রতিরোধে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী ১২টি পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে মাহবুব আলী বলেন, জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত যাত্রী পরিবহ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ৪ হাজার ৩০৫ কোটি টাকা আয় করেছে। এ সময়ে সর্বসাকল্যে লাভের পরিমাণ ৪৬০ কোটি টাকা (অনিরীক্ষিত)।

বিএনপির সাংসদ জিএম সিরাজের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, বর্তমানে দেশে বনভূমির পরিমাণ প্রায় ৬৩ লাখ ৬৮ হাজার ৭৬৫ দশমিক ৬৭ একর।

বিমানবাহিনীর জন্য অত্যাধুনিক সরঞ্জাম
সরকারি দলের সাংসদ মুহিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে সংসদ কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে আরও গতিশীল, যুগোপযোগী ও আধুনিকায়নের লক্ষ্য ১৬টি মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট (এমআরসিএ), ৮টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার, ৩টি ভিভিআইপি হেলিকপ্টার, ২টি এয়ার ডিফেন্স রাডার ইউনিট, ২৪টি প্রাইমারি ট্রেইনার এসি, ২টি লাইট এসি, ১টি কে-৮ ডব্লিউ সিম, ৪টি এমআরএপি ভ্যাকেল, ১টি এডব্লিউ-১১৯ সিম, ২টি কাউন্টার ড্রোন সার্ভ রাডার সিস্টেম, ১টি মোবাইল এটিসি টাওয়ার ক্রয়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।

আনিসুল হক জানান, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় বিস্ফোরক হামলা থেকে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ১৫টি মাইন রেসিস্ট্যান্ট অ্যাম্বুস প্রোটেক্টেড (এমআরএপি) ইউথ জ্যামার কেনা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫০টি এমআরএপি কেনার চুক্তি করা হয়েছে।

সরকারি দলের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক জানান, বর্তমানে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে কর্মরত পাঁচজনসহ বিশ্বের সাতটি দেশে ৮টি শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বমোট ৫ হাজার ৭৪ জন শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছেন, যার মধ্যে ৫১৪ জন কর্মকর্তা।

সরকারি দলের সাংসদ এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, গত বছরের ৩০ জুন সেনাকল্যাণ সংস্থার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৭৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে লাভ ছিল ১৭০ কোটি ৯১ লাখ টাকা (আয়করপূর্ব)।