অফলাইনে প্রচার শেষ, অনলাইনে সরব প্রার্থীরা

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। তবে অনলাইন মাধ্যমে প্রচারণা থেমে নেই। ছবি, পোস্টার, ভিডিও, গ্রাফিকসসহ নানা উপায়ে তাঁরা ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। প্রচারণায় ফেসবুক, ওয়েবসাইট, ইউটিউব, টুইটারসহ নানা মাধ্যম ব্যবহৃত হচ্ছে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে এবার ১৩ জন এবং কাউন্সিলর পদে (সংরক্ষিতসহ) ৭৯৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে মেয়র পদপ্রার্থীদেরই অনলাইনে প্রচার-প্রচারণা সবচেয়ে বেশি। তা ছাড়া অনেক কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরাও অনলাইনে সরব উপস্থিতির জানান দিচ্ছেন।

অনলাইন খুঁজে দেখা গেছে, মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে দুই সিটির আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া চারজন প্রার্থী সনাতন রীতির পাশাপাশি নিয়মিত প্রচারণার অংশ হিসেবে ফেসবুক, ইউটিউব ও নিজস্ব ওয়েবসাইট ব্যবহার করছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসের নিজস্ব একটি ফেসবুক পেজ থেকে নির্বাচনী প্রচার চালানো হচ্ছে। পেজটিতে দেখা গেছে, ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনী প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনী গণসংযোগ ও ঢাকা নিয়ে তাঁর পরিকল্পনারও বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। তাঁর নিজস্ব ওয়েবসাইটে নির্বাচনী গান, ভিডিও, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিয়ে পরিকল্পনা, প্রতিশ্রুতিসহ নানা বিষয় স্থান পেয়েছে। আছে পারিবারিক ছবিও।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তাপসের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইশরাক হোসেনও তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। তাঁর প্রচারে বিভিন্ন সময়ের গণসংযোগের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।

উত্তরের মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলামের প্রচারে ফেসবুকের পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটও ব্যবহার করা হচ্ছে। আতিকের প্রচারে গণসংযোগের পাশাপাশি গত ৯ মাস মেয়র পদে থাকা অবস্থায় তাঁর ইতিবাচক কার্যক্রমও স্থান পাচ্ছে। এ ছাড়া তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারও তুলে ধরা হচ্ছে প্রচারে।

আতিকুল ইসলামের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালও সক্রিয় অনলাইনে। ফেসবুক, ইউটিউব ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাঁর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালানো হচ্ছে। তাঁর নামে তৈরি ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপির এই প্রার্থীর নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হয়েছে। ইশতেহারটি তৈরির ক্ষেত্রে অনলাইনে ভোটারদের মতামত ও পরামর্শও নেওয়া হয়েছে।

>

মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ভোট চাইছেন অনলাইনে।
আতিকুলের ফেসবুকের পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটও রয়েছে।
ইশরাকও তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন।

মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরাও সনাতন পদ্ধতিতে প্রচারের পাশাপাশি অনলাইনকে প্রচারের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ডেইজি সারওয়ারকে ফেসবুকে সরব দেখা গেছে। তাঁর নামে তৈরি একটি ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তা ও গানের মাধ্যমে ভোট প্রার্থনা, ওয়ার্ড নিয়ে তাঁর পরিকল্পনাসহ নানা বিষয় প্রকাশ করা হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ এসব প্রচার দেখছে।

অনলাইনে প্রচারের এই ধরন সম্পর্কে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবীর প্রথম আলোকে বলেন, যুগের সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারের ধরনেও পরিবর্তন এসেছে। এখন ঢাকা শহরের প্রায় সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। তাই অনলাইনে নির্বাচনী প্রচারও অনেক বেশি কার্যকর। সে কারণে এর ব্যবহারও বাড়ছে।