চীনফেরত ৭ জনকে নেওয়া হলো কুর্মিটোলায়

চীন থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশিদের বিশেষ বাসে বহন করা হয়। ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারি। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ
চীন থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশিদের বিশেষ বাসে বহন করা হয়। ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারি। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

ভাইরাস–উপদ্রুত চীনের উহান থেকে ফেরত আসা ৩১৬ জন বাংলাদেশিকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে হজ ক্যাম্পে ‘কোয়ারেন্টাইন’ করে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৭ জনের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি থাকায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইটে আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশিরা ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। যে ৩১৬ জন বাংলাদেশি ফিরেছেন, তার মধ্যে ৩টি শিশু। কোয়ারেন্টাইেন যাঁদের রাখা হয়েছে, তাঁদের কারও সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হবে না। ‘কোয়ারেন্টাইন’ অবস্থায় সেনাবাহিনী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল টিম তাঁদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা, চিকিৎসাসহ সব ধরনের খরচ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার। ক্যাম্পে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাঁদের নিরাপত্তা দেবে।

সরকারি কর্মকর্তারা অনুরোধ করেছেন, চীনফেরত নাগরিকদের আত্মীয়স্বজন যেন ক্যাম্পে ভিড় না করেন। ক্যাম্পে অবস্থানরত নাগরিকদের পরিস্থিতি নিয়মিত জানানোর আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা থাকবে। প্রয়োজনে তাঁরা এসব নম্বরে ফোন করে খবর জানতে পারবেন: ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১,০১৯৩৭১১০০১১।

গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশে চীনা নাগরিক বা চীনফেরত বাংলাদেশি নাগরিকের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা।

আইইডিসিআর সূত্র জানিয়েছে, ২১ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪ হাজার ২৬০ জন যাত্রী চীন থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে সন্দেহভাজন ২৩ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। অন্তত তিনজন ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

চীন থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশিদের বিশেষ বাসে বহন করা হয়। ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারি। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ
চীন থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশিদের বিশেষ বাসে বহন করা হয়। ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারি। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৯ জানুয়ারি চীনের উহানে প্রথম এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। গতকাল পর্যন্ত মারা গেছে ২১৩ জন। আক্রান্ত প্রায় ১০ হাজার। এরই মধ্যে ভাইরাসটি চীন ছাড়াও এ পর্যন্ত ২৪টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।

এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৩০ জানুয়ারি (বাংলাদেশে ৩১ জানুয়ারি) বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য বিষয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। সংস্থাটি বলেছে, একাধিক দেশে এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের নজির পাওয়া গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বৈশ্বিক জরুরি পরিস্থিতির অর্থ হচ্ছে, ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত, অস্বাভাবিক, মারাত্মক ও হঠাৎ করে ঘটেছে। চীন সীমান্তের বাইরে এ ঘটনার প্রভাব আছে। জরুরি অবস্থা ঘোষণার অর্থ ভাইরাস মোকাবিলায় বৈশ্বিক উদ্যোগের প্রয়োজন হতে পারে।