সিলেটে টিলায় আবার ধস, একজনের লাশ উদ্ধার

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরেফিন টিলা। ফাইল ছবি
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরেফিন টিলা। ফাইল ছবি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গর্ত ধসে আবারও পাথরশ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি গর্ত থেকে পাথর তোলার সময়  সেখানে ধসের ঘটনা ঘটে। এতে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েন কয়েকজন শ্রমিক। গর্ত থেকে রুবেল মিয়া (২৫) নামের এক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত চারজন শ্রমিক।

রুবেলের বাড়ি নেত্রকোনার খালিয়াজুরী। তাঁর বাবার নাম মো. ফরিদ। লাশটি কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

যোগাযোগ করলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য একজন শ্রমিকের নিহত হওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে একটি দলসহ তিনি ঘটনাস্থলে গেছেন। গর্ত ধসে অনেক শ্রমিক চাপা পড়ার খবর পাওয়া গেলেও একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন।

গভীর গর্ত করে যন্ত্র দিয়ে যত্রতত্র পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে একের পর এক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনাস্থল হিসেবে পরিচিতি শাহ আরেফিন টিলা। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার যাতায়াত বিড়ম্বিত এলাকা সীমান্তবর্তী পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নে টিলাটির অবস্থান। ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি গর্ত ধসে প্রথম শ্রমিক হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। ওই দিন একসঙ্গে ছয়জন শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এরপর থেকে ওই এলাকায় শুধু জানুয়ারি মাসেই শ্রমিক হতাহত হওয়ার ঘটনা বেশি ঘটছে। উপজেলা প্রশাসনের পরিসংখ্যান ও গত তিন বছরের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে গত তিন বছর জানুয়ারি মাসেই ১২ জন পাথরশ্রমিক নিহত হয়েছেন শাহ আরেফিন টিলায়। চরতি বছরের ২০ জানুয়ারি একজন শ্রমিক নিহত এবং গত ২৩ জানুয়ারি দুই শ্রমিক আহত হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার তানভির হোসেন (২৭) নামের একজন পাথরশ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। তিন দিনের মাথায় আজ রোববার আবারও গর্তধসের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪।

উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, শাহ আরেফিন টিলা সরকারি খাস খতিয়ানের জায়গা। আয়তন প্রায় ১৩৭ দশমিক ৫০ একর। যততত্র পাথর তোলায় টিলাভূমির জায়গা এখন প্রায় সমান্তরাল। লালচে, বাদামি ও আঠালো মাটির এ টিলার নিচে রয়েছে বড় বড় পাথরখণ্ড। এসব পাথর উত্তোলন করতেই চলে যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি।