মেয়েকে হত্যার পর অন্তঃসত্ত্বা মায়ের আত্মহত্যা

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

জুলেখা খাতুনের স্বামী আল মামুন অন্যদিনের মতোই সকালে কাজে চলে যান। ঘরে ছিল জুলেখা ও তাঁদের চার বছরের মেয়ে আমেনা। বেলা গড়াতে শুরু করলে তাদের কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রতিবেশীরা অনেকক্ষণ ডেকেও সাড়া পায়নি। ঘরের দরজা ভেতর থেকে লাগানো ছিল। এরপর দরজা ভেঙে ভেতরে দেখা যায় খাটের ওপর পড়ে আছে আমেনার নিথর দেহ আর জুলেখার লাশ ঝুলছে বাঁশের আড়ার সঙ্গে।

যশোরের শার্শা উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামে আজ রোববার সকালের দিকে এ ঘটনা ঘটে। জুলেখা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরিবার ও আশপাশের লোকজনের ধারণা চুরির অপবাদ সইতে না পেরে তিনি মেয়েকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছে।

এ ঘটনায় পুলিশ থানায় নিয়ে দুই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

জুলেখার স্বামী আল মামুন জানান, তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর শাশুড়ি রোজার মাসে তাঁর স্ত্রীকে একটি সোনার চেইন দিয়েছিলেন। কয়েক মাস আগে লক্ষণপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মো. আলাউদ্দিনের মেয়ে জুলি বেগমের (২২) একটি সোনার চেইন চুরি হয়ে যায়। গতকাল শনিবার সকালে মেয়ে আমেনা চকলেট কিনতে মো. আলাউদ্দিনের দোকানে যায়। আমেনার গলায় তার মায়ের সোনার চেইন ছিল। এ সময় জুলি আমেনার গলা থেকে তাঁর চুরি যাওয়া সোনার চেইন মনে করে চেইনটি জোর করে খুলে নেয়। পরে এই নিয়ে জুলেখা খাতুনের সঙ্গে জুলি বেগমের কথা-কাটাকাটি হয়। জুলি বেগম চেইনটি নিয়ে যান।

মামুন বলেন, আজ সকালে তিনি রাজমিস্ত্রির কাজে যান। অপমান সইতে না পেরে তিনি মেয়েকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছেন।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, মেয়ে আমেনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর গলায় ফাঁস দিয়ে জুলেখা খাতুন আত্মহত্যা করেছেন। এ ব্যাপারে জুলি বেগম ও তাঁর মাকে পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দুটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।