ঢাবি ক্যাম্পাসে আবারও ককটেল বিস্ফোরণ

মধুর ক্যানটিন। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
মধুর ক্যানটিন। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আবারও তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার সকালে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্রদলের সমাবেশের সামনে একটি এবং মধুর ক্যানটিন এলাকায় দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়।

এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুই সপ্তাহে নয়টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া উদ্ধার হয়েছে একটি অবিস্ফোরিত ককটেল। তবে এসব বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

১ জানুয়ারি ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের’ হামলার প্রতিবাদে আজ বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রদল। সংগঠনের কয়েক শ নেতা-কর্মী এতে অংশ নেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে অপরাজেয় বাংলায় এসে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশের একপর্যায়ে অপরাজেয় বাংলার পাশে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এতে আতঙ্কিত পথচারী ও ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা ছোটাছুটি শুরু করেন।

অপরাজেয় বাংলার সামনে ককটেল বিস্ফোরণের কাছাকাছি সময়ে মধুর ক্যানটিন এলাকায় আরও দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। তবে বিস্ফোরণের ঘটনায় কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ককটেল বিস্ফোরণের আগের ঘটনাগুলোতে মামলাও হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়, এমন যেকোনো কর্মকাণ্ড থেকে সব পক্ষকে বিরত থাকার আহ্বান থাকবে।’

এদিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান অভিযোগ করেছেন, বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় আংশিক কমিটি ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি নিয়ে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরাই ককটেল বিস্ফোরণের এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত। কারণ, তাদের কমিটি হওয়ার পর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণ শুরু হয়েছে।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘ নয় বছর পর আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসার সুযোগ পেয়েছি। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস থেকে এখন ছাত্রদল বিতাড়িত। যে শক্তিগুলো চায় যে ছাত্রদল কোনো কর্মকাণ্ড করতে না পারুক, তারাই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। এগুলোর সঙ্গে ছাত্রদলের ন্যূনতম সম্পৃক্ততা নেই।’

এর আগে মধুর ক্যানটিনের পাশে গত ৩০ ডিসেম্বর দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ককটেলের স্প্লিন্টারের আঘাতে ক্যানটিনের কর্মচারী হৃদয় আহত হন। ওই ঘটনার দায়ভার কিছু ‘ভুঁইফোড় সংগঠনের’ ওপর চাপান প্রক্টর। তিনি বলেন, ‘ভুঁইফোড়’ সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসকে ‘অস্থিতিশীল’ করতে চায়। এর আগে ২৯ ডিসেম্বর মধুর ক্যানটিনের সামনে সকালে তিনটি আর সন্ধ্যার দিকে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। আর ২৬ ডিসেম্বর ক্যানটিনের সামনে থেকে একটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়। নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে সেদিন ককটেলটি নিষ্ক্রিয় করে পুলিশের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট৷

আগের ঘটনাগুলোতে প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেছেন, মধুর ক্যানটিনের পার্শ্ববর্তী কলাভবনের ছাদ থেকে ককটেলগুলো ছোড়া হয়ে থাকতে পারে। কারণ, আশপাশ থেকে ককটেল ছোড়া হলে কেউ না কেউ দুর্বৃত্তদের দেখতে পেতেন। কিন্তু এমন কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যায়নি, যিনি কাউকে ককটেল ছুড়তে বা পালিয়ে যেতে দেখেছেন।

যদিও ছাদ থেকে ককটেল ছোড়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন প্রক্টর।