বরিশালে ভুল প্রশ্নপত্রে ২০ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা

বরিশাল
বরিশাল

এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে বরিশাল নগরের একটি কেন্দ্রের ২০ জন শিক্ষার্থীর বাংলা প্রথমপত্রের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা ভুল প্রশ্নপত্রে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা শেষে বিষয়টি নজরে আসায় কান্নায় ভেঙে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এতে এসব শিক্ষার্থীর পরিবার চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে পড়েছে। নগরের হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আজ সোমবার এ ঘটনা ঘটে।
নগরের জগদীশ সরস্বতী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলম অভিযোগ করেন, তাঁর বিদ্যালয়ের ৫০ জন নিয়মিত শিক্ষার্থী হালিমা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তাদের ২০১৯-২০ সালের সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ার কথা। কিন্তু তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জনকে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয় অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের, অর্থাৎ ২০১৮ সালের সিলেবাসের। এসব পরীক্ষার্থী প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর তাদের পাঠক্রমের সঙ্গে প্রশ্নের কোনো মিল খুঁজে না পাওয়ায় কোনো উত্তর দিতে পারেনি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলেও পরীক্ষা শেষে এর কোনো সুরাহা হয়নি।

ভুল প্রশ্নপত্র পাওয়া শিক্ষার্থীরা জানায়, এসএসসির ৩০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার সময়সীমা ৩০ মিনিট। এ পরীক্ষা শুরুর প্রথম ৩০ মিনিট এই নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আজ পরীক্ষা শুরুর পর তাদের হাতে প্রশ্নসহ উত্তরপত্র বিতরণের পর ওই শিক্ষার্থীরা দেখে, তাদের সিলেবাসের সঙ্গে প্রশ্নপত্র মিলছে না। এ জন্য তারা পরীক্ষার উত্তরপত্রে সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হলে এসব শিক্ষার্থীরা কান্নাকাটি শুরু করে।

কয়েকজন অভিভাবকেরা জানান, এ অবস্থায় পরীক্ষার মূল্যায়ন হলে যেসব শিক্ষার্থী ২০১৮ সালের প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ঘটনার সমাধান না হলে শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিপর্যয় হবে।

কেন্দ্র সচিব ও হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম ফকরুজ্জামান বলেন, তাঁদের কেন্দ্রে বোর্ড থেকে অনিয়মিত, অর্থাৎ ২০১৮ সালের সিলেবাসের প্রশ্নপত্র এসেছে ২০টি। আর এ কেন্দ্রে অনিয়মিত পরীক্ষার্থী আছে তিনজন। বাকি ১৭টি প্রশ্ন ভুলক্রমে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। তিনি এ জন্য কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা পরীক্ষা কমিটির সদস্যদের দায়ী করেন। বোর্ড চেয়ারম্যানকে তাৎক্ষণিক বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস বলেন, কেন্দ্রে প্রশ্ন বিতরণের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক ও পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা এ জন্য দায়ী। ঘটনা তদন্তে আগামীকাল মঙ্গলবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, যেসব পরীক্ষার্থী ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে। বোর্ডের নিজস্ব একটি ক্ষমতা আছে, ফলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় প্রাপ্য নম্বর পেতে কোনো অসুবিধা হবে না। এই শিক্ষার্থীদের বিষয় আলাদাভাবে দেখা হবে। পরীক্ষার্থীদের পরের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন তিনি।