ভৈরবে রাত ১২টার পর মাইক বাজানো যাবে না

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এখন থেকে রাত ১২টার পর আর উচ্চ শব্দে কেউ মাইক বাজাতে পারবেন না। এই সময়ের আগেই অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। আজ সোমবার ভৈরব উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় ইমাম উলামা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা সম্মেলনকক্ষে এই সভা চলে। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সায়দুল্লাহ মিয়া। সমন্বয় করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা। সভায় ইমাম উলামা পরিষদের সভাপতি আবদুল্লাহ আল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহসহ অন্তত ৬৫ জন উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ভৈরবে, বিশেষ করে পৌর শহরে দিন দিন শব্দদূষণের মাত্রা বেড়ে চলেছে। কিছু কিছু অনুষ্ঠান বিকেল থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় গভীর রাতে। মাইকের পাশাপাশি শব্দদূষণে যুক্ত হয়েছে পটকা ও আতশবাজি। সব মিলিয়ে চারপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কষ্টদায়ক হয়। বিশেষ করে বেশি দুর্ভোগে পড়ে শিক্ষার্থী ও অসুস্থ ব্যক্তিরা। শব্দদূষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজস্ব মতামত দিচ্ছেন। আবার অনেকে উপজেলা প্রশাসনের কাছে নালিশ করছেন। প্রতিকার পেতে কেউ কেউ ৯৯৯–এ কল দিচ্ছেন। এই অবস্থায় উপজেলা সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে। উদ্যোগের অংশ হিসেবে আজকের সভা।

ইউএনও লুবনা ফারজানা বলেন, আলোচনা করে সমাধানের পথ বের করা গেলে সেই পথ টেকসই হয়। ইমামদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তাঁরা মানুষের সমস্যাগুলো আমলে নিয়েছেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সায়দুল্লাহ মিয়া বলেন, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে রাত ১২টার আগে মাইক ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে। ব্যতিক্রম হলে সংশ্লিষ্ট পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা প্রতিকারে উদ্যোগী হবেন।

ভৈরব ইমাম উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত ওল্লাহ বলেন, ‘আমরাও বুঝতে পারছি ওয়াজে বেশি মাইক ব্যবহার করার কারণে অনেকে ঘুমাতে পারেন না। বিশেষ করে রোগী ও পরীক্ষার্থীরা বেশি সমস্যায় পড়ছে। সে কারণে উপজেলা প্রশাসনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে একমত হয়েছি যে রাত ১২টার পর মাইক ব্যবহার করা হবে না। হলেও সেটি প্যান্ডেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে।’ সংগঠনের সভাপতি আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, ‘আজকের সভার এই বার্তা আমরা মসজিদের ইমামদের কাছে পৌঁছে দেব। তাঁরা জুমার বয়ানে এই বার্তা সব মুসল্লির কাছে ছড়িয়ে দেবেন।’