ভোটে আগ্রহ কমার জন্য দায়ী বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, অনেকে লিখেছেন, ভোট নিয়ে মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এটা সত্য নয়। আর যদি কেউ আগ্রহ হারিয়েও ফেলে, সেটার জন্য দায়ী বিএনপি

আজ সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের ইতিহাসে, বাংলাদেশে যেকোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে অত্যন্ত চমৎকার নির্বাচন হয়েছে। কোনো কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটেনি, লোকক্ষয় হয়নি।

কলকাতার নির্বাচনের উদাহরণ টেনে হাছান মাহমুদ দাবি করেন, যেকোনো বিচারে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন উপমহাদেশের চমৎকার ও ভালো নির্বাচন।

হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২৪ থেকে ৩০ শতাংশ ভোট পড়ে। ঢাকা দক্ষিণে ২৯ এবং উত্তরে ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এই নির্বাচনে ভোটের হার অনেক বেশি হতো। ইভিএম নিয়ে বিএনপির নেতিবাচক প্রচারণার কারণে ৮ থেকে ১০ শতাংশ ভোট কম পড়েছে। বিএনপি শুরু থেকে বলেছে, তারা আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এতে মানুষ শঙ্কিত হয়েছে। নির্বাচনের মাঠে থাকাকে বিএনপি যখন সফলতা বলে, তখন মানুষ মনে করে, বিএনপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে হয়তো সরে গেছে। এসব কারণে মানুষ ভোট দেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

ভোটে আগ্রহ কমে থাকলে তার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ২০১৪ সালে ৫০০ ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা থেকে শুরু করে অনেককে আগুনে পুড়িয়েছে। শিশুদের বই জ্বালিয়ে দিয়েছে। ২০১৮ সালে নির্বাচনে তারা নির্বাচন বাণিজ্য করেছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবীকে অবাক করে দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ এখন আর খাদ্যঘাটতির দেশ নয়, খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ। বাংলাদেশ আজ সব সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। মানব উন্নয়ন ও সামাজিক অনেক সূচকে বাংলাদেশ ভারতকেও অতিক্রম করেছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন কোথাও কোনো ভিক্ষুক বাসি ভাত চেয়ে ভিক্ষা করেন না। দুই টাকা দিলে গালি দেওয়ার আশঙ্কা আছে। ১০ টাকা দিলে মোটামুটি খুশি হতে পারে। ছেঁড়া কাপড় পরা মানুষ পাওয়া কঠিন। গত ১০ বছরে প্রতিটি মানুষের উন্নয়ন হয়েছে। শেখ হাসিনা জানেন, কীভাবে সংকট সমস্যা মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হয়। সে কারণে বাংলাদেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি শুধু আগামী নির্বাচন নয়, আগামী প্রজন্মের কথা ভাবেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির মোস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, ধর্ষণকাণ্ড এখন প্রতিদিনের সংবাদ। তিনি ধর্ষণের বিচার দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা এবং ধর্ষণ প্রতিরোধে আইন সংস্কারের দাবি জানান। তিনি বলেন, সীমান্তে হত্যা সীমান্তের নাগরিকদের মধ্যে বিদ্বেষ তৈরি করছে। ভারতের সঙ্গে চীন, পাকিস্তান, নেপাল সীমান্তে হত্যার ঘটনা বিরল। তাহলে বাংলাদেশের মানুষ কেন সীমান্তে প্রাণ দেবে। এর জন্য দায়ী সংশ্লিষ্টদের অদক্ষতা। তিনি বলেন, বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি, ব্যাংকে লুটপাটের কারণে মানুষ সরকারের ওপর দৃঢ় আস্থা রাখতে পারছে না।

সরকারি দলের সাংসদ শাজাহান খান বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঢাকাবাসী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির পক্ষে, অপশক্তির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সিটি নির্বাচনের পর বিএনপি হরতাল ডেকে প্রমাণ করেছে, তারা গণতন্ত্র ও জনরায়ে বিশ্বাস করে না।

‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করার দাবি জানান শাজাহান খান। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণ শেষ করেছেন জয় বাংলা বলে। গত বছরও রাষ্ট্রপতি জয় বাংলা বলে বক্তব্য শেষ করেছিলেন। তিনি এর মধ্য দিয়ে একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ নাহিদ ইজহার খান।

অন্যদের মধ্যে সরকারি দলের সাংসদ নুরুজ্জামান আহমেদ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ, মো. আক্তারুজ্জামান, সাইমুম সরোয়ার, সংরক্ষিত আসনের সাংসদ মনিরা সুলতানা, অপরাজিতা হক, তামান্না নুসরাত প্রমুখ বক্তব্য দেন।