৪৩টির মধ্যে ২২টিতেই নতুন মুখ

ঢাকা সিটি
ঢাকা সিটি

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৪৩টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের ২২টিতে নতুন প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। বাকি ২১টি ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলররা পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত নারী কাউন্সিলরদের ৩২ জন আওয়ামী লীগ–সমর্থিত।

দুই সিটিতে ৭টিতে জিতেছেন বিএনপি–সমর্থিত নারী প্রার্থীরা। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন ৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন৷

সিটি করপোরেশনের তিনটি সাধারণ ওয়ার্ড মিলে হয় একটি সংরক্ষিত ওয়ার্ড। ঢাকা উত্তর সিটিতে সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮টি ও দক্ষিণ সিটিতে ২৫টি।

পাঁচ বছর আগে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৩১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নির্বাচন হয়। পরে ২০১৭ সালে ঢাকার দুই সিটিতে ৬টি করে নতুন সংরক্ষিত ওয়ার্ড যুক্ত হয়। গত শনিবার অনুষ্ঠিত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৪৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১৫৯ নারী। এর মধ্যে উত্তরের সংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলোতে ৭৭ জন এবং দক্ষিণে ৮২ জন নারী লড়েছেন।

দক্ষিণের ২৫টির ১৯টিতেই আ.লীগ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টি নতুন প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। আর বর্তমান কাউন্সিলররাই আবার নির্বাচিত হয়েছেন ১৪টি ওয়ার্ডে। আর ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯টিতে জিতেছেন আওয়ামী লীগ–সমর্থিত নারী প্রার্থীরা। বিএনপি–সমর্থিত ৫ জন এবং ১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।

সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত যে ১৯ জন প্রার্থী জিতেছেন, তাঁদের মধ্যে ১০ জন বর্তমান কাউন্সিলর। তাঁরা হলেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মিনু রহমান, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ফারহানা ইসলাম, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সৈয়দা রোকসানা ইসলাম, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে নারগীস মাহতাব, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে শিরিন গাফফার, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে লাভলী চৌধুরী, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে নাজমা বেগম, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে নাছিমা আহমেদ, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে নাছরিন আহমেদ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে সেলিনা খান।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি–সমর্থিত ৫ জন নারী প্রার্থী সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে জিতেছিলেন। এবারও ৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বিএনপি–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। এদের মধ্যে চারজন বর্তমান সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর।

বিএনপি–সমর্থিত বর্তমান কাউন্সিলরদের মধ্যে সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডে শামসুন নাহার, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে নাসরিন রশিদ, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সুরাইয়া বেগম এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে খালেদা আলম এবারও জিতেছেন। আর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পাওয়া নিলুফা ইয়াসমিন বিএনপি–সমর্থিত নতুন প্রার্থী।

সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নতুন জয়ী প্রার্থী ৯ জন। তাঁরা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারজানা ইসলাম, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদা শমসের, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিলুফার রহমান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবিনা পারভীন।

১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিনুর বেগম, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে গেন্ডারিয়া থানা মহিলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির মহিলা সম্পাদিকা সাথী আক্তার, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেফালি আকতার, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব মহিলা লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ফারহানা ইয়াসমিন এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাহিদা বেগম।

এবারের নির্বাচনে দক্ষিণের সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। তিনি হলেন ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বই প্রতীকের প্রার্থী মাহফুজা আক্তার।

উত্তরের ১৮টির ১১টিতেই নতুন মুখ

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৮টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টিতে নতুন প্রার্থীরা জিতেছেন। আর ৭ জন বর্তমান কাউন্সিলর আবার নির্বাচিত হয়েছেন। ঢাকা উত্তরের নির্বাচিত ১৮ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলরের মধ্যে ১৩ জন আওয়ামী লীগ–সমর্থিত, ২ জন বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থী ও ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত যে ১৩ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী জয়ী হয়েছেন এর মধ্যে ৪ জন বর্তমান কাউন্সিলর। তাঁরা হলেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডে রাজিয়া সুলতানা, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাজমুন নাহার, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে বাড্ডা থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কামরুন নাহার, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে তুরাগ থানা মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী কমলা রানী।

আওয়ামী লীগ–সমর্থিত নতুন যে ৯ প্রার্থী সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে জয়ী হয়েছেন তাঁরা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডে গুলশান থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেগম হাছিনা বারী চৌধুরী, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ভাষানটেক থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেগম সাহিদা আক্তার, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিখা চক্রবর্তী, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামসুন নাহার।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত নতুন প্রার্থীদের মধ্যে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বনানী থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমেনা বেগম, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিতু আকতার, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে শেরেবাংলা নগর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হামিদা আখতার, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদপুর থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীন আখতার, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক রোকসানা আলম সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।

২০১৫ সালের নির্বাচনে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বিএনপি–সমর্থিত ২ জন প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বেগম মেহেরুন্নেসা হক এবারও জয়লাভ করেছেন। বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন ইলোরা পারভীন। তিনি ২০১৯ সালের ডিএনসিসি উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ঢাকা উত্তরের ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের জাকিয়া সুলতানা বর্তমান কাউন্সিলর।