আ.লীগ ১১২, বিএনপি ৯

আ. লীগ ও বিএনপি
আ. লীগ ও বিএনপি

দল–সমর্থিত ও ‘বিদ্রোহী’ মিলে ঢাকার দুই সিটির ১২৯ কাউন্সিলরের মধ্যে ১১২ জনই আওয়ামী লীগের। বাকি ১৭ জনের মধ্যে বিএনপির কাউন্সিলর ৯ জন, জাতীয় পার্টির ১ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ১ জন এবং স্বতন্ত্র ৫ জন (একজন নারী)। একটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের ফল ঘোষণার পর তা স্থগিত করা হয়।

ঢাকা উত্তরে (ডিএনসিসি) ৫৪টি এবং ঢাকা দক্ষিণে (ডিএসসিসি) ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ড রয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণের দুটি ওয়ার্ডে (২৫ ও ৪৩ নম্বর) ভোট গ্রহণের প্রয়োজন পড়েনি। অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিনই তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তাঁরা দুজনই আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

এবার উত্তর ও দক্ষিণের মোট ৭৫টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ (দলের সমর্থন ও মনোনয়ন না পেয়ে প্রার্থী হওয়া) ছিলেন। এর মধ্যে ১৪টি ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আলোচিত নাম ইরফান সেলিম। তাঁর বাবা ঢাকা-৭ আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ হাজি মো. সেলিম। ইরফান হারিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের বর্তমান কাউন্সিলর মো. হাসানকে। হাজি সেলিমের আপন ভাগনে হাসান।

আর ঢাকা উত্তরের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন আওয়ামী লীগের আরেক সাংসদ (ঢাকা-১১ আসন) রহমতউল্লাহর ভাগনে আইয়ুব আনছার।

বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বিষয়ে কী করণীয়, তা দলের শীর্ষ নেতারা ঠিক করবেন।

 দুই সিটিতে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া মোট ৩১ জন প্রার্থী হেরেছেন। এর মধ্যে দক্ষিণে হেরেছেন ১৯ জন। তাঁদের মধ্যে ১১ জন বর্তমান কাউন্সিলর। উত্তরেও ৪ জন বর্তমান কাউন্সিলর হেরেছেন। এসব ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন।

দলের সমর্থন পাওয়ার পরও পরাজিত হওয়া আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীরা বলছেন, অনেক নেতা–কর্মী বিদ্রোহী প্রার্থীর জন্য কাজ করেছেন।

দুই সিটিতে এবার বিএনপি–সমর্থিত নয়জন কাউন্সিলর প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। গতবারও বিএনপির নয়জন কাউন্সিলর ছিলেন। এবার বিএনপির নয়জন কাউন্সিলরের মধ্যে সাতজনই দক্ষিণ সিটির। বিএনপির এই নয়জন কাউন্সিলরের মধ্যে আটজনের নামে মামলা রয়েছে ১৭৪টি। এর মধ্যে শুধু ঢাকা দক্ষিণের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মির্জা আসলামের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।

দুই সিটিতে এবার সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে বড় দুই দল মোট ছয়জন নারীকে সমর্থন দিয়েছিল। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ দুই নারীকে এবং বিএনপি চার নারীকে কাউন্সিলর পদে দলীয় সমর্থন দিয়েছিল। তাঁরা কেউই জয়ী হতে পারেননি। দলীয় রাজনীতির বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এক তরুণী নির্বাচিত হয়ে চমক দেখিয়েছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন সাহানা আক্তার। তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতির শিক্ষানবিশ আইনজীবী। সাহানা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পুরুষ প্রার্থীদের হারিয়েছেন।

অন্য দল

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. ইবরাহীম দক্ষিণ সিটির ৬৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর। এ ছাড়া ঢাকা উত্তরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সফিকুল ইসলাম ওরফে সেন্টু কাউন্সিলর পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি হারিয়েছেন আওয়ামী লীগ–সমর্থিত একমাত্র নারী কাউন্সিলর প্রার্থী আলেয়া সারোয়ারকে (ডেইজী)।

সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো–কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। কাউন্সিলর হিসেবে গত মেয়াদে ঢাকা উত্তর সিটির বোর্ড সভায় সর্বোচ্চ ১২ বার অনুপস্থিত ছিলেন তিনি।