জাবি উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। নতুন কলাভবন, ৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: মাইদুল ইসলাম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। নতুন কলাভবন, ৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: মাইদুল ইসলাম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে এক সপ্তাহের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

তাঁদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গণসংযোগ, আগামীকাল ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল এবং ১০ ফেব্রুয়ারি ঝাড়ুমিছিল। ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’–এর ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এবং গেল বছরের ৫ নভেম্বর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় উপাচার্যের প্রত্যক্ষ মদদের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর অপসারণ দাবি করেন আন্দোলনকারীরা। উপাচার্যের অপসারণে সরকারকে দ্রুত উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মিখা পীরেগু বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের তদারকির জন্য উপাচার্যের পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে কমিটি গঠনের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে, যাঁদের অনেকে গত ৫ নভেম্বর হামলায় মদদ দিয়েছেন এবং অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। উপাচার্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকে গণ-অভ্যুত্থান বলেছেন। এতে বোঝা যায় তিনি হামলার মদদদাতা। তাই তাঁকে অপসারণ করতে কোনো তদন্তের প্রয়োজন পড়ে না।

মিখা পীরেগু আরও বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের মুখে সরকার থেকে দুর্নীতির তদন্তের কথা বলা হলেও তার কোনো অগ্রগতি নেই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের এমন নির্লিপ্ততা ভেঙে উদ্যোগী হতে হবে। এই উপাচার্যকে অপসারণ না করলে বিশ্ববিদ্যালয় গভীর সংকটে নিপতিত হবে। তাই দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। এ ছাড়া দুর্নীতি ও হামলায় জড়িত সবাইকে রাষ্ট্রীয় আইনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। আর ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে “সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ”–এর মনোনীত প্রার্থীরা সম্পাদকসহ ছয়টি পদে জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া সভাপতি পদে মাত্র পাঁচ ভোটের ব্যবধানে হারতে হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, আমাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বড় একটি অংশের নৈতিক সমর্থন রয়েছে। সরকারকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। না হলে বিশ্ববিদ্যালয় অনিশ্চয়তার দিকে যাবে যা কারও কাম্য নয়।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা, ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি, ছাত্র ফ্রন্টের সদস্যসচিব আবু সাইদ, ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক শাকিল উজ জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জাবি শাখার আহ্বায়ক শোভন রহমান।