'প্রেমের টানে' এসে গরুচোর বলে ধরা

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় গরু চোর সন্দেহে দুই তরুণকে আটক করেছে এলাকাবাসী। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে জানতে পারে এক কিশোরীর (১৬) সঙ্গে প্রেমের সূত্র ধরে ওই দুই তরুণ বরিশাল থেকে সেখানে গেছেন। এরপর ওই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।

দুই তরুণকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে আটক করা হয়। আজ বুধবার বিকেলে কিশোরীর নানা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। আদালত দুই তরুণকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

ওই দুই তরুণ হলেন, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রুস্তম গাজীর ছেলে রবিউল ইসলাম (২০) ও বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হিরণ বিশ্বাসের ছেলে হাসিব বিশ্বাস (২২)।

পুলিশের কাছে এই দুই তরুণ জানিয়েছেন, হাসিবের সঙ্গে ওই কিশোরীর মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। হাসিব এসেছেন রবিউলের সহযোগী হিসেবে। এই দুই তরুণের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে এই দুই তরুণ গোদাগাড়ীর ওই কিশোরীদের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন। বাড়ির লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে গরুচোর সন্দেহে তাঁদের ধাওয়া করেন। তাঁরা সেখান থেকে দৌড়ে পালালেও চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে উপজেলার বিজয়নগর গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েন। ওই গ্রামে যারা গরুচোর ঠেকাতে গোয়ালঘর পাহারা দিচ্ছিলেন, তাঁরা তাঁদের আটক করেন। বাড়ি বরিশালে শুনে এলাকাবাসীর সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। পরে তাঁদের আটকে রেখে গরুচোর ধরা পড়েছে বলে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

পুলিশের কাছে রবিউল দাবি করেছেন, যে বাড়িতে তাঁরা ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন, ওই বাড়ির এক মেয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মেয়েটির বাবার বাড়ি শরীয়তপুর জেলায়। বাবা বিদেশ থাকায় মেয়েটি এখন মায়ের সঙ্গে গোদাগাড়ীতে নানার বাড়িতে থাকে। ওই মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেই তিনি এখানে এসেছিলেন। কিন্তু প্রথমে তাঁর এই কথা কেউ বিশ্বাস করেননি। সবাই ধারণা করেছেন, গরু চুরির সন্দেহ থেকে নিজেদের বাঁচাতেই তাঁরা প্রেমের গল্প ফেঁদেছেন।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, এই দুই তরুণ একটি অটোরিকশায় চেপে ওই বাড়ির কাছে গিয়েছিলেন। পরে ওই অটোরিকশার চালক পুলিশের কাছে এসে বিষয়টি জানিয়েছেন। এরপর তাঁরা গরুচোরের সন্দেহ থেকে মুক্ত হন। এরপর ওই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে, তাহলে এই দুই তরুণ তাদের মেয়েকে অপহরণ করতে এসেছিলেন।

ওসি আরও বলেন, মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে। ওই মামলায় দুই তরুণকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।