পলিথিনে মোড়ানো লাখ লাখ পোস্টার নিয়ে বিপাকে ডিএসসিসি

মাতুয়াইল ল্যান্ড ফিল্ডে সিটি নির্বাচনের পোস্টারের ওপর বর্জ্য ফেলছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। ছবিটি আজ বিকেলে তোলা। ছবি: মুসা আহমেদ
মাতুয়াইল ল্যান্ড ফিল্ডে সিটি নির্বাচনের পোস্টারের ওপর বর্জ্য ফেলছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। ছবিটি আজ বিকেলে তোলা। ছবি: মুসা আহমেদ

নির্বাচনী পোস্টার অপসারণ বা ডাম্পিং করা নিয়ে বিপাকে পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সংস্থাটির অভিযোগ, এসব পোস্টার পলিথিন ও প্লাস্টিকে মোড়ানো। এ কারণে পোস্টারগুলো ল্যান্ড ফিল্ডে ফেললেও তা তাড়াতাড়ি পচবে না। পরিবেশদূষণের কারণে এগুলো পোড়ানোও যাচ্ছে না। ভবিষ্যতে এই ধরনের নির্বাচনে পোস্টারে পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জানতে চাইলে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপদেষ্টা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পলিথিনে মোড়ানো লাখ লাখ পোস্টার নিয়ে আমরা বিপদে আছি।’

আজ বৃহস্পতিবার ৭৫টি ওয়ার্ড থেকে প্রায় ৩০০ ট্রাক নির্বাচনী পোস্টার অপসারণ করা হয়েছে। তবে নতুন কয়েকটি ওয়ার্ডে এখনো কিছু নির্বাচনী পোস্টার ঝুলছে। এগুলো শিগগির অপসারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

১ ফেব্রুয়ারি ডিএসসিসির ৭৫টি ওয়ার্ডে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে মেয়র পদে সাতজনসহ সাধারণ ওয়ার্ড এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে পাঁচ শতাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। কুয়াশা ও বৃষ্টি থেকে বাঁচাতেই পোস্টার ও লিফলেট পলিথিনে মোড়ানো হয়েছিল। গত ২২ জানুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পলিথিনে মোড়ানো পোস্টার ছাপা এবং প্রদর্শন বন্ধের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। কিন্তু তাতে খুব একটা কাজ হয়নি বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, নির্বাচনী পোস্টার এবং এর ওপর পলিথিন-প্লাস্টিক মোড়ানো পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যবিরোধী। এসব পোস্টারে প্রচুর পরিমাণ সিসা থাকে। তাই নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।

ডিএসসিসির নির্বাচনের পোস্টার অপসারণ করছেন এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। ছবি: মুসা আহমেদ
ডিএসসিসির নির্বাচনের পোস্টার অপসারণ করছেন এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। ছবি: মুসা আহমেদ

ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্র জানায়, নির্বাচনের পরের দিন থেকেই পোস্টার অপসারণে তারা একযোগে কাজ শুরু করে। এই কাজে যোগ হয়েছেন প্রতিটি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। আজ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ ট্রাক পোস্টার মাতুয়াইল ল্যান্ড ফিল্ডে ডাম্পিং করা হয়েছে।

আজ ডিএসসিসির লালবাগ, শাহবাগ, যাত্রাবাড়ী, সূত্রাপুর, কদমতলী এলাকা ঘুরে নির্বাচনী পোস্টার দেখা যায়নি। দুপুরে মাতুয়াইল ল্যান্ড ফিল্ডে গিয়ে দেখা যায়, এর পশ্চিম পাশে নির্বাচনী পোস্টারে স্তূপ হয়েছে রয়েছে। তবে এসব পোস্টারের ওপর গৃহস্থালি বা বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। ফলে ল্যান্ড ফিল্ডটি প্রায় ৫০ মিটার পর্যন্ত উঁচু দেখা গেছে।

ডিএসসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে পোস্টার অপসারণের কাজ করেছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী তামিম হোসেন। তিনি বলেন, সাধারণত বাসাবাড়ি বা ডাস্টবিন থেকে তাঁরা বর্জ্য সংগ্রহ করে এই ল্যান্ড ফিল্ডে ফেলেন। এসব বর্জ্য মাসখানেক মধ্যেই পচে যায়। কিন্তু পলিথিন ও প্লাস্টিকে মোড়ানো এসব পোস্টার এক জনমেও পচবে না।

ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপদেষ্টা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম, ডিএসসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে গড়ে চার ট্রাক করে নির্বাচনী পোস্টার সংগ্রহ করা হয়েছে। নতুন ওয়ার্ডগুলো থেকেও পোস্টার সংগ্রহ করার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শুক্রবারের পর আর কোনো অলি-গলিতেও পোস্টার থাকবে না।