নার্সের বিরুদ্ধে রোগীর স্ত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

রাজশাহীর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুরুষ নার্সের (ব্রাদার) বিরুদ্ধে একজন রোগীর স্ত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্রাদারের নাম শাহিনুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছিল।

ওই নারীর ভাশুরের অভিযোগ, সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তাঁর ছোট ভাই ও হয়রানির শিকার ওই নারীর স্বামী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। তিনি চেতনাহীন অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও স্বজনেরা তাঁর দেখাশোনা করছেন। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত জ্যেষ্ঠ ব্রাদার শাহিনুল ইসলাম কৌশলে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে (২০) তাঁর কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। তিনিও অসুস্থ এবং রক্তচাপ পরীক্ষা করার দরকার বলে ব্রাদার জানান। রক্তচাপ পরীক্ষা করার সময় তিনি ওই নারীকে যৌন হয়রানি করেন। ওই নারী বিষয়টি তাঁর স্বজনদের জানান। এরপর ওই নারীর ভাশুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসকের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেন। 


ওই নারীর ভাশুর মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, শাহিনুল হক নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে তাঁর ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। ছোট ভাইয়ের স্ত্রী চিকিৎসা নিতে আগ্রহ না দেখালেও তিনি (শাহিনুল ইসলাম) ডেকে নিয়ে রক্তচাপ চেকআপ করেন।

আরও কয়েকজন রোগীর অভিভাবক অভিযোগ করেন, শাহিনুল ইসলাম ওয়ার্ডে এসে ওই নারীকে যৌন হয়রানি করেন।

গতকাল সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ব্রাদার শাহিনুল ইসলাম বলেন, এসব অভিযোগ ঠিক না।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক হাসান আলী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার (ইউএইচএ) নির্দেশে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার তদন্ত কমিটির সদস্যরা বসবেন। এ ছাড়া প্রাথমিক তদন্তকাজ শুরু করা হয়েছে। এ–সংক্রান্ত আরও কোনো অভিযোগ থাকলে তা লিখিতভাবে জানানোর আহ্বান জানান।

স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, শাহিনুল ইসলাম এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাঁরা শাহিনুলকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছেন। সম্মানহানির ভয়ে অভিযোগ দেননি। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আগের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ইউএইচএ) নার্সদের কক্ষে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন। তিনি পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র চলে গেলে শাহিনুল ইসলাম নার্সদের কক্ষের সিসি ক্যামেরাও অপসারণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে শাহিনুল ইসলাম বলেন, একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকের নির্দেশে ক্যামেরা খুলে রাখা হয়েছে। অভিযোগগুলো সঠিক নয়।