গঙ্গাচড়ায় তিস্তার বাঁধ ভেঙে গেছে, আতঙ্কে এলাকাবাসী

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় তিস্তা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের প্রায় ৮০০ ফুট ভেঙে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে ওই স্থানে নতুন করে বাঁধ নির্মাণ করা না হলে সামনের বর্ষা মৌসুমে বন্যাসহ ব্যাপক নদীভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে ভাঙন এলাকা দিয়ে পানি ওই এলাকা থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ঘাঘট নদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিস্তা নদীর পানি শহরে প্রবেশ করার আশঙ্কাও রয়েছে বলে এলাকাবাসী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানিয়েছে।

পাউবো ও সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার উত্তর-পশ্চিম এলাকায় শেষ প্রান্তে নোহালী ইউনিয়নের পশ্চিম কচুয়া এলাকায় তিস্তা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী জানালেন, এই বাঁধের ভাঙন প্রায় এক মাস আগে থেকে শুরু হয়েছে। একটু একটু করে বাঁধ ভাঙতে ভাঙতে প্রায় ৮০০ ফুট এলাকার বাঁধ ভেঙে পড়েছে। এখন প্রতিদিনই বাঁধ ভাঙছে। এ ছাড়া বাঁধের ভেতরে ৫০টি পরিবারের বসতভিটা ও আবাদি জমি ইতিমধ্যে ভেঙে গেছে। ভাঙনকবলিত এসব পরিবার অন্যত্র বাড়িঘর সরিয়ে নিয়েছে। নতুন করে বাঁধ ভাঙছে। নদীর তীরবর্তী মানুষজনদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

আজ শনিবার ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষজন জানান, শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি না থাকা অবস্থায় নদীর পাড় ভাঙছে। সেই সঙ্গে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে আঘাত হেনেছে ভাঙন। ভেঙে পড়েছে বাঁধ। এই বাঁধ জরুরি ভিত্তিতে নতুন করে নির্মাণ করা না হলে সামনের বর্ষা মৌসুমে নদীর ভাঙন তীব্র হবে। সেই সঙ্গে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে আবাদি জমি।

এলাকার কৃষক অতুল চন্দ্র রায় বলেন, বাঁধের ভেতরে বাড়িঘর থাকায় ১৫ দিন আগে বসতভিটা ভেঙে গেছে। ঘরবাড়ি অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমারও বসতভিটা নদী চলি গেইছে ১০ দিন আগোত। এলা যেমন করিয়া বাঁধ ভাঙতোছে, তাতে করি হামারগুলার মধ্যে ভয় ধরি গেইছে। কেননা এই বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়া নদীর পানি এবার হুহু করিয়া ঢোকবে।’

কৃষক তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘এই এলাকাত এক মাস থাকি বাঁধ ভাঙা শুরু হইছে। এলাকাত পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন আসিয়া দেখি গেইছে। কিন্তু কী করবে, তা আর জানি না।’

ক্ষতিগ্রস্ত নোহালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জোবেদ আলী বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানানোর পর তাঁরা ঘটনাস্থল ঘুরে গেছেন। এরপর কী করা হবে, তা এখনো কিছু জানা যায়নি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে নদীর বাঁধ নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণের জরুরি দরপত্র খুব শিগগির করা হবে।