'শামীমার বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু করার নেই'

শামীমা বেগম। ছবি: সংগৃহীত
শামীমা বেগম। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল হওয়া আইএস জঙ্গি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমের বিষয়ে বাংলাদেশের কিছুই করার নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, শামীমা সে দেশের (যুক্তরাজ্যের) নাগরিক। তিনি কখনো বাংলাদেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেননি। কাজেই তাঁকে নিয়ে বাংলাদেশের কিছু করার নেই।

আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর তিনি এ মন্তব্য করেন।

যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সিরিয়ায় গিয়ে আইএস জঙ্গিকে বিয়ে করেছিলেন শামীমা বেগম। গত বছর শামীমা যুক্তরাজ্যে ফিরতে চাইলে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তাঁর ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেন। গতকাল শুক্রবার শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করার সিদ্ধান্তকে বৈধ বলে রায় দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের আদালত। রায়ে আদালত বলেছেন, ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের ফলে শামীমা বেগম রাষ্ট্রহীন হয়ে যাননি। বংশগতভাবে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দাবি করতে পারেন।
বর্তমানে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ‘রজ’ নামের একটি শরণার্থীশিবিরে অবস্থান করছেন শামীমা বেগম।

শামীমার প্রসঙ্গে এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। শামীমা বেগমের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। শামীমা যুক্তরাজ্যের নাগরিক হিসেবে জন্মেছেন। তিনি থাকেন যুক্তরাজ্যে। তিনি কখনো বাংলাদেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেননি। তাঁর মা-ও কখনো বাংলাদেশের নাগরিকত্বের আবেদন করেননি। তাঁর মা যুক্তরাজ্যের নাগরিক। চৌদ্দ পুরুষ যুক্তরাজ্যের নাগরিক। তাঁর ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। শুধু একটি বিষয় হচ্ছে তাঁর বাবা এক সময় বাঙালি ছিলেন। তারপর তিনি আর বাংলাদেশি হননি। তা ছাড়া তিনি দ্বৈত নাগরিকও নন। কাজেই কোনো অবস্থাতেই শামীমা বেগমকে নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই।’

বর্তমানে ২০ বছর বয়সী শামীমা বেগম ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দুই বান্ধবীসহ সিরিয়ায় পাড়ি জমান। তাঁরা তিনজনই ছিলেন বাংলাদেশি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির ছাত্রী। সিরিয়ায় পাড়ি দিয়ে শামীমা বেগম ডাচ বংশোদ্ভূত আইএস জঙ্গি ইয়াগো রিদাইককে বিয়ে করেন। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিটিশ এক সাংবাদিক সিরিয়ার একটি শরণার্থীশিবিরে শামীমার সাক্ষাৎ পান। তখন শামীমা যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার আকুতি জানান। এর কিছুদিন পর শামীমা একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। তবে কিছুদিন পর শিশুটির মৃত্যু হয়। ইয়াগো রিদাইক ও শামীমা বেগম দম্পতির আগেও দুটি সন্তান হয়েছিল। তবে কোনো সন্তানই বেঁচে নেই। পুষ্টি ও অসুস্থতায় তারা মারা যায় বলে জানিয়েছিলেন শামীমা।

শামীমার স্বামী ইয়াগো রিদাইক গত বছরের মার্চে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি বাহিনীর হাতে আটক ছিলেন। স্ত্রীর ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের খবর জানার পর তিনি তখন বলেছিলেন, স্ত্রীকে নিয়ে তিনি নিজ দেশে ফিরতে চান। যদিও সেখানে ফিরলে সন্ত্রাসী সংগঠনে যোগ দেওয়ার দায়ে তাঁর কারাদণ্ড হতে পারে।