মং রাজার বিয়েতে অতিথি ৫ হাজার

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার পর শুক্রবার খাগড়াছড়িতে প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে মং রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী ও রানী উখেংচিং মারমা। ছবি: সংগৃহীত
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার পর শুক্রবার খাগড়াছড়িতে প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে মং রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী ও রানী উখেংচিং মারমা। ছবি: সংগৃহীত

রাজার বিয়ে বলে কথা। ছিল বর্ণাঢ্য আয়োজন। শেষ হলো খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মং সার্কেল চিফ বা রাজার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী বিয়ে করেছেন খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়াপাড়া এলাকার উখেংচিং মারমাকে।

মারমা রীতি অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ভোরে পানখাইয়াপাড়া এলাকা থেকে বউ নিয়ে আসা হয়। সকাল সাড়ে ছয়টায় করা হয় বধূবরণ। নবদম্পতির উদ্দেশে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী করা হয় মঙ্গলসূত্র পাঠ। সন্ধ্যায় প্রথা অনুযায়ী রাজমাতা মাধবীলতা চৌধুরী রানি হিসেবে বরণ করেন নববধূ উখেংচিংকে।

রানি উখেংচিং মারমা পানখাইয়াপাড়া এলাকার অঙ্ক্যজাই মারমা ও সুইনাইচিং মারমার মেয়ে। তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা ইউনিভার্সিটি থেকে একটি ডিগ্রি নিয়ে বর্তমানে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অধীনে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করছেন।

প্রথা অনুযায়ী, রাজপরিবারের বিয়ে উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন পার্শ্ববর্তী রাজা হেডম্যান, কার্বারি, গুরুত্বপূর্ণ প্রজা ছাড়াও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।

শুক্রবার দুপুরে শহরের গোলাবাড়ি ইউনিয়নে অবস্থিত মং রাজবাড়িতে পাঁচ হাজার মানুষের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল সাদা ভাত ও পোলাও, কয়েক পদের মাছ ও মাংস। এতে উপস্থিত ছিলেন চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়, রানি ইয়েন ইয়েন, পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রাঙামাটির সাংসদ দীপংকর তালুকদার, নারী সাংসদ বাসন্তী চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরাসহ তিন পার্বত্য জেলার সব সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

২০০৮ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তৎকালীন রাজা পাইহ্লাপ্রু চৌধুরীর মৃত্যু হলে রাজ্যভার গ্রহণ করেন ছেলে বর্তমান রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী। রাজার বয়স এখন ৩৫ বছর। তিনি ঢাকার স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করছেন। দুই বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী সবার ছোট। ১৮৭০ সালে মং সার্কেল, চাকমা সার্কেল ও বোমাং সার্কেল নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজপ্রথা শুরু হয়।