চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সরোয়ারের রিমান্ড মঞ্জুর

চট্টগ্রাম পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেনকে অস্ত্র মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফি উদ্দিন শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

গত শনিবার ঢাকার শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিবাসন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন সরোয়ার। আরেক সন্ত্রাসী নুরনবী ম্যাক্সনের সঙ্গে কাতারে চাঁদাবাজির টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে মারামারির ঘটনায় এক মাসের সাজাভোগ করে ফিরে আসেন সরোয়ার।

চট্টগ্রামে আট ছাত্রলীগ নেতা খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাজ্জাদ আলী খানের অন্যতম সহযোগী সরোয়ার ও ম্যাক্সন। ভারতে পলাতক সাজ্জাদ ‘শিবির ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত। ২০০০ সালে আট ছাত্রলীগ নেতা খুনের ঘটনার পর গা-ঢাকা দেন সাজ্জাদ। সেই থেকে তাঁর হয়ে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী, পাঁচলাইশ, ডবলমুরিং এলাকার অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন সরোয়ার ও ম্যাক্সন। অস্ত্র পরিচালনা ও কথায় কথায় গুলি ছুড়তে অভ্যস্ত তাঁরা। পুলিশ জানায়, সরোয়ার ও ম্যাক্সনের বিরুদ্ধে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী, ডবলমুরিং ও পাঁচলাইশ থানায় হত্যা, বিস্ফোরক, ডাকাতি ও চাঁদাবাজির ১৬টি করে মামলা রয়েছে।

গতকাল রোববার সরোয়ারকে নিয়ে বায়েজীদ বোস্তামী এলাকায় তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি একটি একে টুটু রাইফেল, দুটি এলজিসহ গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলা করে পুলিশ।

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্র মামলায় সরোয়ারকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে বায়েজীদ বোস্তামী থানা-পুলিশ। শুনানিতে আদালতে বলা হয়, আসামি একজন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। মামলা রয়েছে ১৬টি। অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারও হয়েছেন। এখন তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা প্রয়োজন। নইলে এই অস্ত্র ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, খুনসহ নানা অপরাধ কার্যক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।

রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে সরোয়ারের পক্ষে কয়েকজন আইনজীবী আদালতকে বলেন, তিনি (সরোয়ার) আড়াই বছর পর বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন। তাঁর কাছে কোনো অস্ত্র নেই। সব সাজানো।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, সাজ্জাদ বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর অস্ত্রভান্ডারের রক্ষক ছিলেন সরোয়ার ও ম্যাক্সন। অস্ত্র কেনাবেচা থেকে শুরু করে ভাড়াও দিতেন তাঁরা। ২০১১ সালের জুলাই মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিঙ্গারবিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন ম্যাক্সন। তাঁর দেওয়া তথ্যে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে সরোয়ারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে সে সময় উদ্ধার করা হয় একটি একে-৪৭ রাইফেল, দুটি পিস্তল, একটি এলজি, একে-৪৭ রাইফেলের দুটি ম্যাগজিন ও গুলি।

বায়েজীদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের আদেশটি পাওয়ার পর অস্ত্র ভান্ডারের তথ্য জানতে সরোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হবে।