গাম্বিয়ার জন্য তহবিল সংগ্রহে সম্মেলন করবে ওআইসি

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা মামলা পরিচালনায় গাম্বিয়ার তহবিল সংগ্রহের জন্য একটি সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে ওআইসি। আফ্রিকার নাইজারে ৩ ও ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে ওই সম্মেলন হবে।

আজ মঙ্গলবার জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ওআইসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত রোববার থেকে সৌদি আরবে অনুষ্ঠেয় ওআইসির তিন দিনের এ বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়েছে, ওআইসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকে রোহিঙ্গা গণহত্যা রোধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিজে) সর্বসম্মত সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বৈঠকে বলা হয়েছে, গত ২৩ জানুয়ারি আইসিজে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়ে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার নিশ্চিতের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে আইসিজের চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত আদালতের অন্তর্বর্তী আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তোলা এবং রোহিঙ্গাদের তাদের আইনসম্মত মাতৃভূমিতে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ওআইসি রাজি হয়েছে।

সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশের এক কূটনীতিক গত শনিবার এই প্রতিবেদককে জানান, গাম্বিয়ার করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা গণহত্যা রোধে আইসিজে চার দফা নির্দেশনা দিয়েছে। এ বিষয়ে অন্তত জুলাই পর্যন্ত সময় পাবে মিয়ানমার। তা ছাড়া গাম্বিয়ার করা রোহিঙ্গা গণহত্যার মূল মামলার প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। গণহত্যার মামলার বিষয়টি শেষ হতেও বেশ কয়েক বছর লাগবে। এই পরিস্থিতিতে গাম্বিয়াকে ওআইসির সদস্যদেশগুলো কীভাবে সহায়তা করবে, তা নিয়ে আলোচনা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় মামলার কাজ চালাতে গাম্বিয়াকে আর্থিকসহ সব ধরনের সহযোগিতা নিশ্চিত করার স্বার্থে ওই সম্মেলনের আয়োজন করার চেষ্টা চলছে।

ওআইসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকের ফাঁকে পররাষ্ট্রসচিব রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহির জন্য গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্যদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি আইসিজেতে মামলা করার জন্য গাম্বিয়ার ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি তহবিল সংগ্রহসহ রাজনৈতিক সমর্থন এবং রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে ফেরার ব্যাপারে কমিটির সব সদস্য দেশের অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন।

ওআইসির একাধিক কার্যক্রম ঢাকায়
এ বছর ওআইসির একাধিক অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে ওআইসিতে ব্যাপক সংস্কার নিয়ে এ মাসের দ্বিতীয়ার্ধে ঢাকায় আলোচনা। এ ছাড়া এপ্রিলের মাঝামাঝি ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল হিসেবে ঢাকায় জড়ো হবেন ৫৭ জোটের সদস্যদেশের তরুণদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ভারতসহ বেশ কিছু অমুসলিম দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তরুণ প্রতিনিধিরা।