চট্টগ্রাম বন্দরে পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে তোড়জোড়

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর একটি মাত্র টার্মিনাল অপারেটর প্রতিষ্ঠানের হাতে অনেকটা জিম্মি হয়ে আছে। এখন নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালেও ওই প্রতিষ্ঠানকে অপারেটর নিয়োগ দিতে তোড়জোড় চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, দরপত্রে এমন শর্ত দেওয়া হয়েছে যাতে, পছন্দের ওই প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কেউ অংশ নিতে না পারে।

জাতীয় সংসদে আজ বুধবার ‘বাংলাদেশ বাতিঘর বিল-২০২০’-এর ওপর আলোচনায় কাজী ফিরোজ রশীদ এ কথা বলেন।

কাজী ফিরোজ বলেন, ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সাইফ পাওয়ার টেক নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে কোনো দরপত্র ছাড়াই কাজ দিয়েছিল। এখন পর্যন্ত তারাই এককভাবে জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কাজ করে আসছে। এই প্রতিষ্ঠানটিকে না সরালে বন্দরে কনটেইনার জট কমবে না। এ কাজে একটি প্রতিষ্ঠানের জায়গায় আরও প্রতিষ্ঠান আনতে হবে। দরপত্র সহজ করে দিতে হবে। পৃথিবীর কোনো দেশে একটি কোম্পানিকে দিয়ে এ ধরনের কাজ করানো হয় না।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে কাজী ফিরোজ বলেন, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে অপারেটর নিয়োগে তোড়জোড় চলছে। নৌপ্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে প্রতিকার চান ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে কনটেইনারবাহী জাহাজের জট বাড়ছেই। মাত্র একটি অপারেটর দিয়ে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং করায় এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখানে একচেটিয়া ব্যবসা (মনোপলি বিজনেস) শুরু হয়েছে।

কাজী ফিরোজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় বলেছিলেন, সবাই যেন স্বাচ্ছন্দ্যে দরপত্রে অংশ নিতে পারে। কিন্তু দরপত্র এমনভাবে করা হয়, যাতে কেউ অংশ নিতে না পারে।

জবাবে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে তোড়জোড় চলছে—এ ধরনের কোনো সুযোগ নাই। সব ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সরকার বদ্ধপরিকর।

এর আগে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ‘বাংলাদেশ বাতিঘর বিল-২০২০’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন।

বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

১৯২৭ সালের ‘দ্য লাইট হাউস অ্যাক্ট’ বাতিল করে নতুন আইন করতে বিলটি পাস করা হলো। বিলে বলা হয়েছে, বাতিঘর মাশুল পরিশোধ না করে কোনো জাহাজ নৌপথে চলাচল করলে তা আটকে রাখা হবে। কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের মালিকানাধীন অথবা নৌবাহিনী অথবা কোস্টগার্ডের জাহাজ, যা কোনো ভাড়া আদায়ের উদ্দেশ্যে মালামাল অথবা যাত্রী পরিবহন করে না; এমন জাহাজ বাতিঘর মাশুলের আওতার বাইরে থাকবে।