সরকারি শাড়ি চায়ের দোকানে

রংপুরের বদরগঞ্জে নতুন ৪০টি শাড়ি-লুঙ্গি উদ্ধার করা হয়েছে। পৌর শহরের সিও রোডের একটি চায়ের দোকান থেকে ওই শাড়ি ও লুঙ্গি উদ্ধার করেন গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক পরিবারকল্যাণ সহকারী রেজিয়া বেগম। এসব শাড়ি-লুঙ্গি বদরগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের বলে তিনি জানান। এর পরে উদ্ধার করা ওই শাড়ি-লুঙ্গি তিনি উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন।

 রেজিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ (গতকাল বুধবার) বেলা একটার দিকে এসব শাড়ি ও লুঙ্গি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বস্তায় ভরে একটি রিকশাযোগে পাচার করা হয়েছিল। ওই কার্যালয় থেকে বস্তাসহ রিকশাটি বের হওয়ার সময় তা আমার চোখে পড়ে। পরে রিকশার পিছু ধরে দেখতে পাই বদরগঞ্জ পৌর শহরের সিও রোডের স্বপন চন্দ্র রায়ের দোকানে বস্তাটি রেখে রিকশাচালক দ্রুত চলে যান। এরপর সেই বস্তা খুলে দেখি ২০টি নতুন শাড়ি ও ২০টি লুঙ্গি। সেখান থেকে রংপুর পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক সাইদুল ইসলামকে তা মুঠোফোনে অবহিত করি। তাঁর পরামর্শে ওই শাড়ি-লুঙ্গি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে এনে জমা দিয়েছি।’

চা–বিক্রেতা স্বপন চন্দ্র রায় বলেন, ‘অপরিচিত এক রিকশাচালক বস্তাটা তাঁর দোকানে রেখে দ্রুত চলে গেছেন।’

উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নারী কিংবা পুরুষ কেউ জন্মনিয়ন্ত্রণে স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করলে বিধি অনুযায়ী সরকারিভাবে নগদ ২ হাজার ৪৫ টাকাসহ পুরুষ হলে একটি লুঙ্গি এবং নারী হলে একটি নতুন শাড়ি উপহার দেওয়া হয়। 

উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম বলেন, ‘আজ (গতকাল) সরকারিভাবে আমার কার্যালয়ে কিছু শাড়ি ও লুঙ্গি এসেছে। স্টোরকিপার আবদুর রউফকে তা বুঝিয়ে নিতে বলে একটি প্রশিক্ষণে গিয়েছিলাম। পরে প্রশিক্ষণস্থল থেকে খবর পেয়েছি কিছু শাড়ি ও লুঙ্গি বাইরে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসব শাড়ি-লুঙ্গি আমার কার্যালয়ের কি না, তা স্টোরে না মেলানো পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। যদি এগুলো আমার কার্যালয়ের হয়ে থাকে, তাহলে স্টোরকিপারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, স্টোরের চাবি শুধু তাঁর কাছেই থাকে।’

জানতে চাইলে স্টোরকিপার আবদুর রউফ বলেন, ‘আমি কোনো শাড়ি ও লুঙ্গি বাইরে পাচার করিনি।’

রংপুর পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক সাইদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘সরকারি শাড়ি-লুঙ্গি বাইরে যাওয়ার কথা নয়। একজনের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পরেই স্টোর মেলানোর জন্য বদরগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। ঘটনা সত্যি হলে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।’