তাঁরা টিভির পর্দায় খালেদা জিয়ার প্যারোলের আবেদন করেন: ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া সরকার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোল বিবেচনা করতে পারে না। তিনি বলেন, ‘তাঁকে (খালেদা) প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার জন্য পরিবার থেকে বিভিন্নভাবে আবেদন করা হয়েছে। যাঁরা এ আবেদন করেন, টেলিভিশনের পর্দায় আবেদন করেন। আমি সকালের খবর নিয়েছি, তাঁরা লিখিতভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্যারোলের জন্য আবেদন করেননি। এখন লিখিত আবেদন করলেও এই আবেদন কারণসহ যুক্তিসংগত হতে হবে। যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্যারোল বিবেচনা করতে পারেন না, সরকার বিবেচনা করতে পারে না।’

ওবায়দুল কাদের আজ বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের হ্যালিপ্যাড চত্বরে এ সম্মেলনের আয়োজন হয়।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি (মির্জা ফখরুল) বলেছেন সরকার জেলের মধ্যে খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলতে চায় কষ্ট দিয়ে। সে ধরনের ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেই। আমরা এই প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। বেগম জিয়াকে জেলের মধ্যে মেরে ফেলব—এ রাজনীতি বঙ্গবন্ধু করেন নাই, শেখ হাসিনাও করে না।’

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে দলের লোকেরা বলে একটা, আর চিকিৎসকেরা বলেন আরেকটা। চিকিৎসকেরা বলেন তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে আছে। আর দলের লোকেরা তাকে অসুস্থ থেকে আরও বেশি অসুস্থ বানিয়ে যতটা না চিকিৎসার জন্য ভাবছে, তার চেয়ে বেশি রাজনীতি করছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়াকে কি আওয়ামী লীগ জেলে নিয়েছে? তাঁকে কি শেখ হাসিনা জেলে নিয়েছেন? তাঁকে জেলে নিয়েছেন আদালত। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মামলায় তিনি বিচারাধীন আছেন। তার মামলাটি রাজনৈতিক মামলা নয়, দুর্নীতির মামলা।

কাদের বলেন, রাজনৈতিক মামলা হলে সরকার তাঁর মুক্তি নিয়ে বিবেচনা করতে পারত। দুর্নীতি মামলায় তাঁকে মুক্তি দেওয়ার একমাত্র এখতিয়ার রয়েছে আদালতের।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, শেখ হেলাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, সাংসদ শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, পৌর মেয়র শেখ আহম্মেদ হোসেন মির্জা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার খায়ের প্রমুখ বক্তব্য দেন। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী।

দ্বিতীয় অধিবেশনে আবুল বাশার খায়েরকে সভাপতি ও মো. বাবুল শেখকে সাধারণ সম্পাদক করে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং শেখ সাইফুল ইসলামকে সভাপতি ও ফোরকান বিশ্বাসকে সাধারণ সম্পাদক করে পৌর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।