মধুর প্রেমের করুণ পরিণতি

নুসরাত জাহান ও সালমান সাহেদ চুয়াডাঙ্গা শহরের বাসিন্দা। একসঙ্গে তাঁরা এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ঢাকাতেও তাঁরা একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।

দীর্ঘদিনের চেনাজানা থেকে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁদের ভালোবাসাকে উভয় পরিবার স্বীকৃতি দেওয়ায় সম্পর্কে যোগ হয়েছিল নতুন মাত্রা। পারিবারিকভাবে আগামী ২৭ মার্চ তাঁদের বিয়ের দিনও ধার্য হয়েছিল। কিন্তু সম্পর্কটা আর বিয়েতে রূপ নিল না। গত বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা শহরের মাস্টারপাড়ার বাসার শয়নকক্ষ থেকে নুসরাতের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সালমান ঢাকার আহ্‌ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করে ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ‘প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস’ প্রকল্পের (প্যাকেজ-১) আওতায় সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কুষ্টিয়াতে যোগ দেন। তিনি সেখানে কর্মরত। তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহরের হকপাড়ার বাসিন্দা আবদুল বারীর ছেলে। নুসরাত একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পাস করেন। নুসরাতের বাবা শহরের ফেরিঘাট সড়কের ব্যবসায়ী আবদুল হান্নান মুন্সী। বাড়ি মাস্টারপাড়ায়।

সালমান জানান, দুজনের ভালো লাগা ২০১৪ সালে ভালোবাসায় রূপ নেয়। এই সম্পর্কের পারিবারিক সম্মতিও মেলে। পারিবারিকভাবে দিন ঠিক হওয়ার পরও তার আগেই বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন নুসরাত। গত ১২ ডিসেম্বর রাত ১১টা ২৪ মিনিটে সর্বশেষ কথা হয় নুসরাতের সঙ্গে। কথা বলার সময় বিয়ের দিন এগিয়ে আনার জন্য চাপ দেন নুসরাত। পরিবারের সিদ্ধান্তের বাইরে তা সম্ভব নয় জানানোর পর নুসরাত ফোন ভেঙে ফেলেন। সালমান বলেন, ‘এরপর নুসরাতের মায়ের ফোনে কল করে কথা বলি। এ সময় আমি তাঁকে বলি, ফোন ভাঙা ঠিক হয়নি। পরে রাতে অন্তত ২০০ বার চেষ্টা করেও কথা বলতে পারিনি নুসরাতের সঙ্গে। পরে সকালে লোকমুখে নুসরাতের আত্মহত্যার খবর জানতে পারি। ও অভিমানী ছিল। অভিমানেই নুসরাত আত্মহত্যা করেছে।’

নুসরাতের চাচা ফজলে রাব্বী মুন্সী জানান, ‘নুসরাত-সালমানের সম্পর্কের বিষয়টি উভয় পরিবারের সদস্যরা জানতেন। এ কারণে নুসরাতের পরিবার থেকেই সালমানের চাকরির ব্যবস্থা করা হয়। তবে কিছুদিন ধরে নুসরাত-সালমানের মধ্যে মান-অভিমান চলছিল। যতদূর জেনেছি, সালমানের কথায় অভিমান করেই নুসরাত আত্মহত্যা করেছে।’