প্যারোল হচ্ছে অপরাধ-শাস্তি মেনে মুক্তির আবেদন: তথ্যমন্ত্রী

অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাজাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন, প্যারোল হচ্ছে নিজের অপরাধ ও শাস্তি মেনে নিয়ে মুক্তির আবেদন। তবে এখন পর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্যারোলের কোনো আবেদন করা হয়নি।

আজ শনিবার সকালে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরে শরীরচর্চা কলেজ ময়দানে অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন। তাঁর দাবি, খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে বিএনপি নিজেই দ্বিধান্বিত।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত, খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্যারোলের কোনো আবেদন করা হয়নি। আপনারা দেখছেন, তাঁর পরিবারের বরাত দিয়ে একধরনের কথা, আবার দলের পক্ষ থেকে আরেক ধরনের কথা বলা হচ্ছে। একদিকে আন্দোলনের ডাক, অন্যদিকে আমাদের সাধারণ সম্পাদককে ফোনে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ করে তারা আসলে কী চান, সেটা এখনো স্পষ্ট করতে পারেননি।’

মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া শুধু প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলেই সরকারের বিবেচনা করার সুযোগ থাকে, এ ছাড়া তাঁকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো এখতিয়ার নেই। বিএনপি নেতারা প্রতিদিন খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে কথা বলেন, আর বলেন সরকার বাধা দিচ্ছে। বেগম জিয়া কোনো রাজনৈতিক বন্দী নন, তিনি দুর্নীতির দায়ে সাজা ভোগ করছেন। এবং বাংলাদেশে আইন ও আদালত স্বাধীন। সুতরাং তাঁকে জামিন পেতে হলে আদালতের মাধ্যমেই পেতে হবে। বিএনপি আইন–আদালতের তোয়াক্কা করে না, কিন্তু সবাইকেই আইন মেনে চলতে হয়।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা জিঘাংসা বা প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না, বরং বিএনপি করে। ২০০৪ সালে বিএনপির আমলে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়, তাঁর ছেলে তারেক রহমানের পরিচালনায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা পরিচালিত হয়েছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে।

নিজ দলের উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভাই যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, তখন তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ছিলেন। বিদেশ থেকে যে চিকিৎসকেরা এসেছিলেন, তাঁরাও বলেছেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যে চিকিৎসা দিয়েছে, তা বিশ্বমানের এবং সঠিক।’

খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাঁকে কারাগারের প্রকোষ্ঠে না রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে, উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাঁর সঙ্গে পছন্দের গৃহপরিচারিকাকে রাখা হয়েছে, সার্বক্ষণিক নার্স রয়েছেন। নিয়মিত তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরাও তাঁকে সময়ে সময়ে পরীক্ষা করেন। সুতরাং বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপির কথাগুলো জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।

এর আগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী। অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সামস-উল ইসলামসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।