ইঁদুরের আক্রমণে এক লাখ টন ফসলের ক্ষতি

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে ইঁদুরের আক্রমণে এক লাখ চার হাজার ৪৯২ টন ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের সাংসদ হাবিবা রহমান খানের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী এই তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।

কৃষিমন্ত্রী জানান, ইঁদুরের আক্রমণে প্রতি বছর আমন ধানের ৫-৬ শতাংশ, গমের ৪-১২শতাংশ, আলুর ৫-৭ শতাংশ, আনারসের ৬-৯ শতাংশ নষ্ট হয়ে থাকে। ইঁদুর গড়ে মাঠ ফসলের ৫-৭ শতাংশ এবং গুদামজাত শস্যের ৩-৫ শতাংশ ক্ষতি করে থাকে।

মন্ত্রী আরও জানান, ইঁদুরের আক্রমণে ২০১৭ সালে ৯০ হাজার ৩৮৫ মেট্রিক টন, ২০১৬ সালে ৮৮ হাজার ৮৪৪ মেট্রিক টন, ২০১৫ সালে ৯৪ হাজার ৩৮৮ মেট্রিক টন এবং ২০১৪ সালে ৯৬ হাজার ৬৯৬ মেট্রিক টন ফসলের ক্ষতি হয়। ইঁদুরের আক্রমণ থেকে ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি রক্ষা করতে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

অন্ত:দ্বন্দ্বে ৩১টি মুক্তিযোদ্ধা যাচাই কমিটির বাছাই হয়নি
সংরক্ষিত আসনের সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, মুক্তিযোদ্ধার নামে তালিকাভুক্তির জন্য প্রাপ্ত দেড় লাখ আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ৪৭০টি কমিটি গঠন করা হয়। এর অধিকাংশের প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। ৮৫টির প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে ৫৪টি মামলা ও অবশিষ্টগুলো কমিটির সদস্যদের মধ্যে অন্ত:দ্বন্দ্বের জন্য যাচাই-বাছাই শেষ হয়নি। এগুলো শেষ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পুরো যাছাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর কোনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বাদ পড়লে তাঁর বিষয়ে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, তথ্য অনুযায়ী অন্ত:দ্বন্দ্বের কারণে ৩১টি কমিটির যাছাই-বাছাই হয়নি।

রাজাকারদের তালিকা তৈরি করতে যুদ্ধকালীন কমান্ডার ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ লক্ষ্যে নির্দেশনা প্রদান করে জেলা প্রশাসকদের নতুন করে চিঠি দেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সরকারি দলের সাংসদ মুহিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জানান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে গত বছরের ২৮ এপ্রিল জেলা প্রশাসকদের কাছে রাজাকারের তালিকা সংগ্রহের জন্য চিঠি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২জন জেলা প্রশাসক মাত্র ৩৯৯ জনের একটি আংশিক তালিকা পাঠিয়েছেন। রাজাকারদের পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা সংগ্রহ করার জন্য যুদ্ধকালীন কমান্ডারসহ প্রকৃতি মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে তালিকা সংগ্রহের নির্দেশনা দিয়ে জেলা প্রশাসকদের আবারও চিঠি দেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

অসীম কুমার উকিলের প্রশ্নের জবাবে আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের থেকে পাওয়া রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের তথ্য হুবহু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এ তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উত্থাপিত হলে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে তা প্রত্যাহার করা হয়।

১৫.৫৮শতাংশ বনভূমি
সরকারি দলের সাংসদ এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন জানান, বর্তমানে দেশের বনভূমির আয়তন প্রায় ২৩ লাখ হেক্টর। এটি দেশের মোট আয়তনের ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। মন্ত্রী জানান, বন অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো বিরানভূমি নেই। তবে কিছু কিছু এলাকায় জবরদখল রয়েছে। কিছু বনভূমি অবক্ষয়িত হয়েছে।

সংরক্ষিত আসনের লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন জানান, পরিমাপকৃত বায়ুর গুণগত মান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুমে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত বায়ুদূষণের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বেড়ে যায়। তিনি বলেন, ২০০২ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বায়ুমানের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ থেকে ২০১৯ এই তিন বছর বায়ুমান বেশি খারাপ হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনটি ঘটেছে। বায়ু দূষণের উৎস হিসাবে ইটভাটা, যানবাহন, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম, পয়োবর্জ্য ও বায়োমাস পোড়ানো এবং ট্রান্সবাউন্ডারি প্রভাবকে দায়ী করা হয়।

মেরিটাইম পলিসি হচ্ছে
জাতীয় পার্টির সাংসদ মসিউর রহমানের প্রশ্নের জবাবে সংসদ কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, সমুদ্র কমিশন গঠনের কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। তবে, দেশের সমুদ্র সীমার নিরাপত্তা ও সমুদ্র সম্পদ সুরক্ষা এবং বিশাল সমুদ্র এলাকায় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কাজে প্রসারের লক্ষ্যে যুগোপযোগী খসড়া মেরিটাইম পলিসি প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ওই নীতিমালায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/দপ্তরের সমন্বয়ে একটি জাতীয় মেরিটাইম ডিভিশন গঠনের প্রস্তাব রয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমা মীমাংসার পর ব্লু-ইকোনমির উৎকর্ষতা এবং কর্ম পরিধি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে/বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা সিসমিক সার্ভে, ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ইত্যাদি কার্যক্রমের কুতুবদিয়া, চানুয়া মহেশখালী ও কক্সবাজার সংলগ্ন এলাকায় পরিচালিত হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে ব্লু-ইকোনমিক এলাকাগুলোয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম হাব হিসেবে গড়ে উঠবে।

গত অর্থ বছরে বিমান লাভে ছিল
সরকারি দলের আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, বিমানের দুর্নীতি ও ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। ফলে বিমানের দুর্নীতি বহুলাংশে কমে এসেছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিমানের আয় ছিল পাঁচ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা, এ সময় ব্যয় হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৭৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। চলতি অর্থ বছরের প্রথম ৬ মাসে অনিরীক্ষিত ও করপূর্ব নিট লাভ হয়েছে ৪২৩ কোটি টাকা।