ডাক সঞ্চয়ে সুদের হার আগের মতো করার দাবি সংসদে

জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি
জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি

ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে মেয়াদি ও সাধারণ হিসাবে আমানতের সুদের হার আগের মতো ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির সাংসদ পীর ফজলুর রহমান।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে পীর ফজলুর এই দাবি জানান।

পীর ফজলুর বলেন, অর্থমন্ত্রী ডাকঘরের সঞ্চয় স্কিমে সুদের হার এক ধাপে কমিয়ে ৬ শতাংশ নিয়ে এসেছে। মধ্যবিত্ত, অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী ও নারীরা সাধারণত এই স্কিমে টাকা সঞ্চয় করেন। এই সুদের হার ছিল ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, সেটা একবারে কমিয়ে অর্থমন্ত্রী ৬ শতাংশে এনেছেন।

অর্থমন্ত্রী কেন মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ে হাত দিচ্ছেন—এই প্রশ্ন রেখে পীর ফজলুর বলেন, বিদেশে প্রতিবছর ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। ঋণখেলাপিরা টাকা পাচার করছেন, সেটা ঠেকানো যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ চুরির টাকা আনতে পারছে না। কিন্তু মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ে সুদের হার কমানো হয়েছে। এর আগে সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও কমানো হয়েছে।

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে জাপার এই সাংসদ বলেন, ব্যাংক ডাকাতি, টাকা আত্মসাৎ, বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ করুন। তিনি ডাক সঞ্চয়ে সুদের হার আগের মতো করা এবং সঞ্চয়পত্রে সুদের হার আগের মতো বাড়ানোর দাবি জানান। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী বিবৃতিও দাবি করেন পীর ফজলুর।

সরকারি ব্যাংকে সুদের হার সমপর্যায়ে নিয়ে আসতে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে আমানতের সুদের হার কমানো হয়েছে বলে যুক্তি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বলেছে, ১৩ ফেব্রুয়ারি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) সঞ্চয় কর্মসূচির সুদের হার কমানোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

আজ বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ডাকঘর থেকে যেমন সঞ্চয়পত্র কেনা যায়, তেমনি ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের আওতায়ও টাকা রাখা যায়। ডাকঘরে চারভাবে টাকা রাখা যায়। ডাকঘর থেকে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরে সঞ্চয়পত্র কেনা যায়, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাব খোলা যায়। আবার ডাক জীবনবিমাও করা যায়। এবার সুদের হার কমেছে ডাকঘরের সঞ্চয় স্কিমের মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাবে।

সাধারণ হিসাবের ক্ষেত্রে সুদের হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আর তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার হবে ৬ শতাংশ, যা এত দিন ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ ছিল। মেয়াদ পূর্তির আগে ভাঙানোর ক্ষেত্রে এক বছরের জন্য সুদ পাওয়া যাবে ৫ শতাংশ, আগে যা ছিল ১০ দশমিক ২ শতাংশ। এ ছাড়া দুই বছরের ক্ষেত্রে তা হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, আগে যা ছিল ১০ দশমিক ৭ শতাংশ।