প্রথম আলো সম্পাদকের জামিন

আদালতের আদেশের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিবাদীপক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি। ছবি: প্রথম আলো
আদালতের আদেশের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিবাদীপক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় অবহেলার অভিযোগে করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান জামিন পেয়েছেন।

আজ সোমবার সকালে ঢাকার ভারপ্রাপ্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম দুই হাজার টাকা মুচলেকায় মতিউর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেন।

আদালতে মতিউর রহমানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি, আমিনুল গনি টিটো, প্রশান্ত কুমার কর্মকার, চৈতন্যচন্দ্র হালদার, আশরাফুল আলম, সুমন কুমার রায়, আবদুর রহিম, শাহ আলম, আফতাব উদ্দিন সিদ্দিকী রাগিব প্রমুখ। বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী ওমর ফারুক আসিফ।

পরে মতিউর রহমানের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি সাংবাদিকদের বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি নিয়ে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।

এই মামলায় গত ২০ জানুয়ারি মতিউর রহমানকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। এরপর তাঁকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। সংশ্লিষ্ট আদালতে তিনি জামিন আবেদন করলে তা বিবেচনা করতে বলা হয়।

একই সঙ্গে ‘কিশোর আলো’ সম্পাদক আনিসুল হকসহ অপর পাঁচজনকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলার অভিযোগ গঠন না করা পর্যন্ত তাঁদের হয়রানি বা গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। অপর চারজন হলেন প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক এবং কিশোর আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক মহিতুল আলম। 

হাইকোর্টে প্রথম আলো সম্পাদকের পক্ষে শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম বলেছিলেন, গত ১ নভেম্বর রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ মাঠে কিশোর আলোর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠান দেখতে নাইমুল সেখানে যায়। মামলায় বলা হয়, মঞ্চের পেছনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাইমুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে। অথচ মঞ্চের পেছনের স্থানে কারও যাওয়ারই কথা নয়। অভিযোগে বলা হয়, বিদ্যুৎ-সংযোগ স্থাপন অরক্ষিত ছিল। যে নিরাপত্তামূলক ও সাবধানতা গ্রহণ করা প্রয়োজন ছিল, তা নেওয়া হয়নি। কিন্তু বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনায় যাঁরা নিয়োজিত ছিলেন, তাঁরা বড় বড় রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানও করে থাকেন। ওই অনুষ্ঠানে সব ধরনের সহায়তার ব্যবস্থা রাখা হয়। সেখানে জরুরি সেবা দিতে মেডিকেল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স ছিল।

গত ৬ নভেম্বর নাইমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান ঢাকার আদালতে নালিশি মামলা করেন। ওই দিনই মামলাটি আমলে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরপরই ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রথম আলো সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। এই ১০ জনের অন্য চারজন হলেন ওই অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মী।