জুয়া অবৈধ ঘোষণার রায় স্থগিত চেয়ে দুই ক্লাবের আবেদন

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অর্থের বিনিময়ে ডায়েস, হাউজি, কার্ডস, ফ্লাস, ওয়ান-টেন, চড়চড়ি, ওয়ান-এইট ও নিপুণ খেলার মতো খেলা বেআইনি ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে ঢাকা ক্লাব ও গুলশান ক্লাব। এই আবেদন আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন চেম্বার বিচারপতি। আজ সোমবার চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ দিন ধার্য করেন।

দেশের পাঁচ জেলার ১৩টি ক্লাবে অর্থের বিনিময়ে হাউজি, ডায়েস ও কার্ডের মতো অভ্যন্তরীণ খেলার আয়োজন নিয়ে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে অর্থের বিনিময়ে, বাজি ধরে বা অন্য কোনোভাবে ভাগ্যের ওপর নির্ভর এসব খেলা আয়োজন বেআইনি ঘোষণা করা হয়। ঢাকাসহ সব মহানগর এবং এর বাইরের ক্লাব ও জনসমাগমস্থলে এমন খেলার আয়োজন করা যাবে না বলে ঘোষিত রায়ে বলা হয়।

হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ঢাকা ক্লাব ও গুলশান ক্লাব আবেদন করে, যা আজ সোমবার চেম্বার বিচারপতির আদালতে ওঠে।

আদালতে ক্লাবের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল ও মাসুদ রেজা সোবহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

পরে আইনজীবী মাসুদ রেজা সোবহান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ঢাকা ক্লাব ও গুলশান ক্লাব একটি আবেদন করে। চেম্বার আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ না দিয়ে আবেদনটি ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, আইন অনুসরণ না করে ১৩টি ক্লাবে জুয়া, ডায়েস ও কার্ডের মতো অভ্যন্তরীণ খেলা আয়োজনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬ সালে আইনজীবী মোহাম্মদ সামিউল হক ও রোকন উদ্দিন মো. ফারুক হাইকোর্টে ওই রিটটি করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন।

১৩টি ক্লাবে অর্থের বিনিময়ে হাউজি, ডায়েস ও কার্ডের মতো অভ্যন্তরীণ খেলার আয়োজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ক্লাবগুলোকে এসব কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে স্বরাষ্ট্রসচিব; পুলিশের মহাপরিদর্শক; ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার; চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা ক্লাব আপিল বিভাগে আবেদন করে। এর শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ রুল নিষ্পত্তি করতে সময় বেঁধে দেন। রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করা হয়।

হাইকোর্টের দেওয়া রুলে অর্থের বিনিময়ে ওই সব ক্লাবে কার্ড, ডায়েস ও হাউজি ইত্যাদির মতো অভ্যন্তরীণ খেলার নামে জুয়া আয়োজনকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ খেলার নামে যেকোনো ধরনের জুয়া কার্ডস, ডায়েস, হাউজি, নিপুণ খেলা ওই সব ক্লাবে ও অন্যত্র রোধে কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। এই রুল যথাযথ ঘোষণা করে ১০ ফেব্রুয়ারি রায় দেন হাইকোর্ট।

১৩ ক্লাব হচ্ছে ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, ধানমন্ডি ক্লাব, বনানী ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব ঢাকা, ঢাকা লেডিস ক্লাব, ক্যাডেট কলেজ ক্লাব, চিটাগাং ক্লাব, চিটাগাং সিনিয়রস ক্লাব, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, সিলেট ক্লাব ও খুলনা ক্লাব।