সুনামগঞ্জে শিশু তুহিন হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ

তুহিন মিয়া
তুহিন মিয়া

সুনামগঞ্জে নৃশংস কায়দায় পাঁচ বছরের শিশু তুহিন মিয়া হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আদালতে দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলামসহ তিনজন সাক্ষ্য দেন। অন্য দুজন হলেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের হস্তলিপি বিশারদ মো. আবদুর রহিম ও মো. আহসানুল করিম। মামলার ২৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গত বছরের ১৪ অক্টোবর সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কেজাউরা গ্রামে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। সকালে বাড়ির পাশের একটি গাছের ঢালে ঝুলন্ত অবস্থায় তুহিনের রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। তুহিনের গলা, দুই কান ও যৌনাঙ্গ কাটা ছিল। পেটে বিদ্ধ ছিল দুটি ছুরি। এ ঘটনায় তুহিনের মা মনিরা বেগম বাদী হয়ে পরদিন অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে দিরাই থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মালায় পুলিশ তুহিনের বাবা আবদুল বাছির (৪০), চাচা নাসির উদ্দিন (৩৫), আবদুল মছব্বির (৪৫) ও জমসেদ আলী (৬০) এবং ১৭ বছরের এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে নাসির ও কিশোর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ তুহিন হত্যা মামলায় গত ৩০ ডিসেম্বর এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। ৭ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন হয়।

এই মামলায় গত ১৩ জানুয়ারি তুহিনের মা মনিরা বেগমসহ পাঁচজন সাক্ষ্য দেন। এরপর পর্যায়ক্রমে বাকিদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। আদালতে তুহিনের মা মনিরা বেগম বলেছেন, ১৩ অক্টোবর রাতে তুহিন তার বাবা আবদুল বাছিরের সঙ্গে একই খাটে ঘুমিয়ে ছিল। তিনি ছিলেন পাশের কক্ষে। গভীর রাতে তুহিনের চাচাতো বোন তাদের ঘুম থেকে ডেকে তুলে জানায়, ঘরের দরজা খোলা। তখন তিনি দেখেন তুহিনের বাবার পাশে তুহিন নেই। পরে সকালে জানতে পারেন তুহিনকে কে বা কারা হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। কে বা কারা তুহিনকে হত্যার করেছে তিনি জানেন না।

দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। মামলার সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আমরা আশাবাদী দ্রুততম সময়ে এই মামলার রায় হবে এবং আসামিরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী বজলুল মজিদ চৌধুরী জানান, মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ। শিশু আদালতে আগামী রোববার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য আছে।