খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি রোববার

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানির দিন আগামী রোববার ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ দিন ধার্য করেন।

ওই মামলায় গতকাল মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখার আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা, যা আজ আদালতে তুলে ধরা হয়।

আদালতে খালেদার জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন, কায়সার কামাল প্রমুখ।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন গুরুতর অসুস্থ। অসুস্থতার যুক্তিতে নতুন জামিন আবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আদালত আগামী রোববার শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জামিন আবেদনে খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতার কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, তাঁর উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে, তথা যুক্তরাজ্যের মতো দেশে তাঁর অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট বা বায়োলজিক এজেন্ট নামের থেরাপি নেওয়া প্রয়োজন। দেশের বাইরে মডার্ন অ্যাডভান্সড থেরাপি ট্রিটমেন্ট নিতে এই জামিন আবেদন করা হয়।

কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিন, নাকি প্যারোলে মুক্তি, তা নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের মধ্যে নতুন করে বিতর্ক চলছে। সরকারি দলের মন্ত্রী ও নেতারা বিএনপিকে প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে উৎসাহ দেখাচ্ছেন, যাতে বিএনপি এ প্রক্রিয়ায় আবেদন করে। কিন্তু বিএনপি সেদিকে যেতে চায় না, তারা আইনি প্রক্রিয়ায় জামিন চায়।

এর আগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে বিফল হয়ে গত বছরের ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগে জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে করা আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন। তখন আদালত বলেছিলেন, যদি আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) প্রয়োজনীয় সম্মতি দেন, তাহলে মেডিকেল বোর্ড দ্রুত তাঁর অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য পদক্ষেপ নেবে, যা বোর্ড সুপারিশ করেছে। এর দুই মাসের মাথায় গতকাল জামিন আবেদন হলো।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত। খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হলে গত বছরের ৩১ জুলাই তা খারিজ হয়।

এর আগেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হয়। এর বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে আপিল করেন। অন্যদিকে দুদক তাঁর সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করে। শুনানি শেষে হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। এর বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ মার্চ লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, হত্যা, নাশকতা, রাষ্ট্রদ্রোহ, মানহানি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিসহ ৩৭টির বেশি মামলা রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া কারাবন্দী আছেন। শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে গেলে গত বছরের এপ্রিলে চিকিৎসার জন্য তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে আছেন।