গাজীপুরে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু

গাজীপুরে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে ইয়াসমিন বেগম (৪০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়ে ইয়াসমিনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওই নারী মারা যান।

ইয়াসমিন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভাওয়াল গাজীপুর এলাকার আবদুল হাইয়ের স্ত্রী।

নিহতের ছেলে ইয়াছিন আরাফাতের দাবি, গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ভাওয়াল গাজীপুর এলাকায় তাদের বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশ তাঁর বাবাকে খোঁজ করে। না পেয়ে মা ইয়াসমিন বেগমকে ধরে নিয়ে যায়। মা পুলিশের সঙ্গে যেতে না চাইলে তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। এরপরও মায়ের মোবাইলে ফোন করলে পুলিশ ফোন ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় মাকে মারধর করার শব্দ শুনতে পান তিনি।

নিহতের ছেলের দাবি, রাত ১১টার দিকে এক পুলিশ সদস্য তাঁর মায়ের মোবাইল দিয়ে ফোন করে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে যেতে বলেন। পরে আবার ফোন আসে। তখন তাঁকে বলা হয়, তাঁর মা অসুস্থ। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তিনি যেন গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। পরে তিনি হাসপাতালে গিয়ে তাঁর মায়ের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন। রাত একটার দিকে মায়ের লাশ পুলিশ তাঁকে দেখতে দেয়।

ইয়াছিন আরাফাতের অভিযোগ, ‘মাদক ব্যবসার মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ মাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। আমি মায়ের মৃত্যুর ঘটনার বিচার চাই।’

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত ১০টার দিকে ইয়াসমিন বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। এ সময় তাঁর বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট ছিল। রাত সোয়া ১১টার দিকে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মো. মনজুর রহমান বলেন, ইয়াসমিন ও তাঁর স্বামী আবদুল হাই মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা আছে। অভিযান চালিয়ে ১০০টি ইয়াবাসহ ইয়াসমিনকে আটক করা হয়। আটকের পর ইয়াসমিন অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।